|
|
|
|
বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি আর্থিক অঞ্চল |
প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ গড়ার পথেই রাজ্য |
গার্গী গুহঠাকুরতা • কলকাতা |
চর্মনগরীর লাগোয়া বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের দৈনন্দিন সমস্যার দাওয়াই হিসেবে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্তই নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে চর্মশিল্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নতুন চুক্তি সই করছে রাজ্য। চলতি মাসের গোড়ায় এই চুক্তি সই হয়ে যাওয়ার কথা।
সল্টলেক সেক্টর ফাইভের নবদিগন্ত-র ধাঁচে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ ছাড়া বানতলার দূষণ ও অন্যান্য সমস্যার সমাধান যে সম্ভব নয়, সে কথা আগেই জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেই প্রশাসনিক কাঠামো তৈরির আগে গোটা বিষয়টিতে চর্মশিল্পকে আরও দায়বদ্ধ করতে চায় রাজ্য। সেই সূত্রেই নতুন চুক্তি করার এই উদ্যোগ। সম্প্রতি সেই চুক্তি সই করতে রাজি হয়েছে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন-ও। রাজ্যকে চিঠি দিয়ে সে কথা জানিয়েছে তারা।
দূষণের ভুত বানতলা চর্মনগরী লাগোয়া তথ্যপ্রযুক্তি আর্থিক অঞ্চলকে প্রথম দিন থেকেই তাড়া করে ফিরেছে। বছর দুয়েক আগে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প সংস্থাগুলি লগ্নি বাঁচানোর স্বার্থে বর্জ্য নিকাশি নালা পৃথক করে নেয় নিজেদের খরচেই। |
লাগোয়া চর্মনগরী থেকে গড়িয়ে আসা দূষিত জল।—নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু এ সব করেও সুরাহা হচ্ছে না বলে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির অভিযোগ। তাদের আরও অভিযোগ, এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে বর্জ্য পরিশোধন না-করে সরাসরি তা ফেলা হচ্ছে। ফলে চর্মনগরীর নালা উপচে বর্জ্য ঢুকে পড়ছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প তালুকে। আর এ সবই হচ্ছে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে। ফলে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে যে, স্বস্তিতে কাজ করাই দায় হয়ে উঠছে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের ক্ষোভ, প্রশাসন কড়া হলে সমস্যা এত দূর গড়াত না।
অন্য দিকে চর্মশিল্পের দাবি, প্রথমে বানতলার ওই স্থান চর্মশিল্পের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। তাই সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে কেন জমি দেওয়া হল, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ উদ্যোগীরা। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, অনিয়মিত জল সরবরাহের কারণে নিত্য সমস্যার মুখে পড়েন তাঁরা। ফলে বাধ্য হয়েই গভীর নলকূপ বসিয়ে জল তুলতে হয়।
এ ধরনের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের জেরে মার খেয়েছে বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের লগ্নিও। এই বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে ১৮টি সংস্থা জমি নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কগনিজ্যান্ট, টেক মহীন্দ্রা ও আই গেট-এর মতো সংস্থা। কিন্তু কগনিজ্যান্ট ছাড়া আর কোন সংস্থা এখনও ক্যাম্পাস তৈরি করেনি।
২০০৯ সাল থেকেই প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ ‘বানতলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি’ গড়ার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তার শুরু। কিন্তু প্রস্তাবিত সমাধানসূত্র গত পাঁচ বছর ধরে ফাইলবন্দি। ২০১১ সালে বর্তমান সরকার এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করলে তা সরকারের অন্দরমহলে মতানৈক্যের জেরে থমকে যায়। শিল্প দফতরের প্রস্তাবে প্রশ্ন তোলে পুর দফতর। পুর দফতরের দাবি ছিল, এ বিষয়ে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হলে, তার ঘাড়ের উপর চেপে বসবে বাড়তি আর্থিক বোঝা। পার পেয়ে যাবে পরিকাঠামো গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম দামে জমি পাওয়া নির্মাণ সংস্থাও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই বাড়তি আর্থিক বোঝার আশঙ্কা দূর করতেই ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে নয়া চুক্তি করতে চায় রাজ্য। অর্থাৎ পরিকাঠামো উন্নয়ন ও ব্যবহার বাবদ খরচের ভার চর্মশিল্প নিয়মিত নিতে রাজি হলে, সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে বলে মনে করছে সরকারি মহল।
|
পুরনো খবর: দূষণে নাজেহাল বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক |
|
|
|
|
|