কড়া ব্যবস্থার ইঙ্গিত পার্থের
দূষণে নাজেহাল বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক
ফের দূষণের জেরে নাভিশ্বাস বানতলা চর্মনগরীর লাগোয়া তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের। গাঁটের কড়ি খরচ করেও কলকাতা আই টি পার্কের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি ঠেকাতে পারল না চর্মনগরীর দূষণ। প্রায় দু‘কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য নিকাশি-নালা পৃথক করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। অভিযোগ, নিয়মের তোয়াক্কা না-করেই বর্জ্য ফেলছে চামড়া কারখানাগুলি। এই পরিপ্রেক্ষিতে এ বার ‘কড়া দাওয়াই’ দেওয়ার কথা জানিয়েছে শিল্প দফতর।
বানতলায় দূষণের সমস্যা নতুন নয়। সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজতে গত দু’মাস ধরে দফায় দফায় বৈঠক করেছে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তৈরি হয়েছে একটি টেকনিক্যাল কমিটি। যে-কমিটির এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা।
কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। আর এমন সময়ে এই সমস্যা প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে, যখন টেক মহীন্দ্রা, আই-গেট পাটনির মতো বিনিয়োগকারী নতুন করে এখানে নিজেদের প্রকল্প নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। ফলে রাজ্যের মুখ বাঁচাতে মাঠে নামছেন শিল্পমন্ত্রী নিজেই। আগামী সপ্তাহে শিল্প তালুক পরিদর্শনে যাচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি নিছক পরিদর্শন নয়। নিয়ম ভেঙে যে সব কারখানা চলছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “লাগাতার এই সমস্যা চলছে। কড়া পদক্ষেপ করা ছাড়া উপায় নেই।”
দূষণের ভুত বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্পকে প্রথম দিন থেকেই তাড়া করে ফিরেছে। জোটেনি সেক্টর ফাইভের নবদিগন্তের ধাঁচে কোনও ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি’। সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে না-থেকে বছর দুয়েক আগে বিকল্প ব্যবস্থা করছে বানতলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের সংস্থাগুলি। নিজেদের লগ্নি বাঁচানোর স্বার্থে তারা বর্জ্য নিকাশি-নালা পৃথক করে নেয় নিজেদের খরচেই। লক্ষ্য, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প প্রকল্পে ঢুকে পড়বে না চর্মনগরীর বর্জ্য। নিয়মিত পাম্প চালিয়ে এই ব্যবস্থা টিঁকিয়ে রাখার বাৎসরিক খরচ নেহাত কম নয়।
কিন্তু এ সব মেনে নিয়েও শেষ রক্ষা করা যাচ্ছে না বলে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির দাবি। তাদের অভিযোগ, এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে বর্জ্য পরিশোধন না-করে সরাসরি বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ফলে চর্মনগরীর নালা উপচে বর্জ্য ঢুকে পড়ছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প তালুকে। আর এ সবই হচ্ছে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ক্ষোভ, পর্ষদের ঢিলেঢালা মনোভাবেই সমস্যা বাড়ছে।
১২০ একর জমির উপর তৈরি এই বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে ১৮টি সংস্থা জমি নিয়েছে। বাজার দরেই এখানে জমি কিনেছে কগনিজ্যান্ট, টেক মহীন্দ্রা ও আই-গেট পাটনির মতো সংস্থা। ৪০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগে তৈরি হয়েছে কগনিজ্যান্টের ক্যাম্পাস। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, দূষণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সংস্থার আন্তর্জাতিক মানের তথ্য কেন্দ্র বা ডেটা সেন্টারের যন্ত্রপাতি। অন্যান্য জায়গার তুলনায় এই ক্যাম্পাস রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। ‘গ্রাম ছাড়া ওই কগনিজ্যান্ট-এর পথ’ ক্যাম্পাস সম্পর্কে ইন্টারনেটে এমনই মন্তব্য জুটছে সংস্থার। সৌজন্যে দূষণ ছাড়াও রাস্তাঘাট, আলো, নিকাশি, জল-সহ বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবার অভাব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.