শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তদের শাস্তির দাবিতে সিপিএমের তরফে টাঙানোর হোর্ডিংয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ওই প্রশ্ন তোলেন। একই সঙ্গে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতমবাবুর প্রশ্ন, “ওই হোর্ডিংয়ে সিপিএম লিখেছে, ঘটনায় যুক্ত তৃণমূল বোর্ড সদস্যদের শাস্তি দিতে হবে। অথচ বোর্ডে তৃণমূল শুধু নয়, কংগ্রেসের সদস্যও রয়েছেন। তা হলে সে কথা লেখা হয়নি কেন?” এর পরেই গৌতমবাবুর অভিযোগ, কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের যোগসাজশ কতটা গভীর তা পের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই হোর্ডিং থেকেই। সম্প্রতি এসজেডিএ-র দুর্নীতির মামলায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে শহর জুড়ে হোর্ডিং টাঙিয়েছে সিপিএম। গৌতমবাবু জানান, কংগ্রেসও এক দাবিতে শহরে হোর্ডিং দিয়েছে। সব দোষীদের শাস্তির দাবিতে কংগ্রেস দফতরের নিচেই সেই হোর্ডিং ছিল। তা আবার ভেঙে দেওয়া হয়। দুটি দলই এইসব প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।
মন্ত্রী জানান, এসজেডিএ স্বচ্ছতার সঙ্গে চালানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি পুরোপুরি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাই কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ মেলায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অফিসারদের পদোন্নতি বাতিল, বদলিও করা হয়েছে। পাশাপাশি, গত ২০ বছরের সংস্থার কাজের পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সেখানে কী ফাইল ঠিক আছে। কী ফাইল নেই। উত্তরায়ন উপনগরীর জমির মত বিষয়গুলিও রয়েছে। কোনও রকম দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা বরদাস্ত করা হবে না। তাই অনলাইন এলইউসিসি সার্টিফিকেট, টেন্ডারের টাকা ড্রাফটের মাধ্যে সরকারি ব্যাঙ্কে জমার মত বিষয়গুলি কার্যকর করা হয়েছে।
মন্ত্রীর আঁতাতের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস এবং সিপিএমের নেতারা। রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “অবান্তর কথা বলা হচ্ছে। আমরা আমাদের মত প্রচার করছি। এসজেডিএ-র দুর্নীতিতে শাসক দলের নেতা, বিধায়কদের নাম জড়িয়েছে। তাই শাসকদলের বিরুদ্ধেই মূল তদন্ত চাওয়া হয়েছে। সঠিকভাবে তদন্ত হলে আর বাকিদের নাম সামনে চলে আসবে।” এই প্রসঙ্গে জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্করবাবুর বক্তব্য, “সংস্থার বোর্ডে ৯ জন তৃণমূলের ১ জন কংগ্রেসের সদস্য রয়েছে। ওঁরাই তো সংস্থার সব। এর চেয়ে বেশি কিছু বলব না।” উল্লেখ্য, এসডেডিএ দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় ইতিমধ্যে বোর্ড সদস্য শঙ্করবাবুকেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এদিনই কাওয়াখালি উপনগরীর একটি সংগঠন ভূমিহারাদের প্যাকেজ এবং টাকা বিলিবন্টন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, এসজেডিএ সঠিকভাবে ওই কাজ করেনি। এমন ৮৩ জনকে টাকা দেওয়া হয়েছে, যাঁরা প্রকৃত জমির মালিক নন। এমনকি, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া এক বামপন্থী নেতা এবং তাঁর পরিবারও রয়েছে। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী তথা এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান গৌতমবাবু বলেন, “অনেক সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অনেক কিছু বলা হচ্ছে। এসব ঠিক নয়। ভূমিহারাদের সঙ্গে আমি অনেকবার বৈঠক করেছি। আগামী ৬ নভেম্বর সংস্থার বোর্ড মিটিং হবে। সেখানে কাওয়াখালির স্ট্যাটাস রিপোর্ট থাকবে। বিষয়টি দেখা হবে।”
|