বন্ধ বাগানে এক মাসে ভুগে মৃত আট, নালিশ
বিনা চিকিৎসায় নানা রোগে ভুগে গত এক মাসের মধ্যে ডুয়ার্সের বন্ধ রেড ব্যাঙ্ক এবং একই মালিকানাধীন সুরেন্দ্রনগর চা বাগানের আট জনের মৃত্যু হয়েছে। বাগান সূত্রের খবর, এর মধ্যে শুধুমাত্র রেড ব্যাঙ্ক বাগানে ৬ জন মারা গিয়েছেন। মৃতদের মধ্যে ৩ জন মহিলা-সহ এক ১২ বছর বয়সী বালক আছে। বাগানের বহু মানুষ নানান অসুখ বিসুখে ভুগছেন। হাসপাতাল থাকলেও সেখানে নেই কোন চিকিৎসকক ও ওষুধ। দু মাস ধরে বাগানে পানীয় জলের সরবরাহ বন্ধ। তেষ্টা মেটাতে ভরসা বাগানের শ্রমিক বস্তির ৫টি গভীর নলকূপ। বহু মানুষ বাগান লাগোয়া ডায়না নদীর জল খেতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি সাহায্য বলতে ২ টাকা কিলো দরে সারা মাসে ৭ কিলোগ্রাম চাল।
গম মিললেও মাসের বেশির ভাগ সময় আধ পেটা অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে বেঁচে রয়েছেন। ওই দুই বাগানের ১২০২ জন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের কয়েক হাজার সদস্য রয়েছে। কাজের খোঁজে বাগানের অনেকে ভিনরাজ্যে গিয়ে দিন মজুরির কাজ করছেন। যারা বাগানের বাদ বাকি শ্রমিক ডায়না নদীতে পাথর তুলে সারা দিনে যা উপার্জন করছেন তা দিয়ে আধ পেটা খেয়ে বেঁচে রয়েছেন। পেটের জ্বালায় অনেকে বাড়ির পাশের গাছ কেটে বিক্রি করছেন। আবার অনেকে থালা বাসন বিক্রি করে খাবারের সংস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে, যে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে দ্রুত বাগানটি না খোলা গেলে মৃতের তালিকা দীর্ঘ হবে বলে বাগানের বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন।
কালীপুজোর আলোকসজ্জায় কঙ্কালের নাচ কুমারগ্রামে।
কালীপুজোর আরও খবর দু’য়ের পাতায়। ছবি: রাজু সাহা।
শুক্রবার অবশ্য বাগানে প্রশাসনের নির্দেশে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল টিম বাগানে গিয়ে দেড়শ মানুষের চিকিৎসা করেন অসুস্থদের বেশিরভাগ রক্তাল্পতা ও অপুষ্টিজনিত রোগ-সহ নানান রোগে ভুগছেন বলে দলের চিকিৎসক মৃণালকান্তি দে সরকার জানান। গুরুতর দু’জনকে বাইরের হাসপাতালে রেফার করা হয়।
ধূপগুড়ির বিএমওএইচ সাধন সরকার বলেন, “বাগানের পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের আগে কেউ কিছু জানাননি এখন থেকে সপ্তাহে দুইদিন করে বাগানে ওষুধ-সহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের চিকিৎসকরা এসে চিকিৎসা করবেন। কী কারণে লোকজন মারা গিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জলপাইগুড়ির মহকুমা শাসক সীমা হালদার বলেন, “এদিন ধূপগুড়ির বিডিও ওই বাগানে পরিদর্শনে গিয়েছেন। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বাগানে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হবে।” দুটি চা বাগানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নাগরাকাটার কংগ্রেস বিধায়ক যোসেফ মুন্ডা। বিধায়কের কথায়, “বাগানের বর্তমান পরিস্থিতি ভাল নয়। মৃত্যু ঠেকাতে প্রশাসনের উচিৎ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
গত ২০০৩ সাল থেকে অচলাবস্থা চলছে ডুয়ার্সের ওই বাগান দুটিতে। ২০১১ সালে বাগান দুটি চালু হলেও ২০১২ সালের ডিসেম্বরে মালিক ফের বাগান ছেড়ে চলে যান। এবছর ১০ জুন বাগান ফের চালু হয়। তবে চার মাস বাদে ১৯ অক্টোবর ফের বিনানোটিশে বাগানটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। রেড ব্যাঙ্ক বাগানের প্রধান করণিক দেবব্রত পালের কথায়, “শ্রমিকদের থেকে কেটে নেওয়া প্রভিডেন্ট ফান্ডের দু কোটি টাকা জমা হয়নি। শ্রমিকদের এক মাসের ও অফিসের কর্মচারীদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। আগে ওএমসি কমিটি গড়ে কাঁচা পাতা তুলে বাগান চালানো হয়েছে। এবার এমন নির্দেশ এখনও সরকার দেয়নি।”
বাগানের চা গাছগুলির গড় বয়স ৯০ বছর বলে জানিয়েছেন বাগানের শ্রমিকরা। বহু বছর ধরে মালিক পক্ষ নতুন গাছ না লাগানোয় পুরনো গাছ থেকে সেভাবে পাতা মিলছিল না। এতে শীতকালে গাছ থেকে তেমন পাতা মেলে না।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.