দ্বিতীয় বার ইতিহাস মুঠোয় পুরতে পারলেন না সৌরভ ঘোষাল। প্রথম ভারতীয় হিসেবে বিশ্ব স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর কলকাতাজাত বাঙালির সামনে বিশ্বের এক নম্বর স্কোয়াশ তারকার কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছিল। সেই লড়াইয়ে শীর্ষবাছাই মিশরের রামি আশৌরের কাছে শেষ পর্যন্ত ৯-১১, ৫-১১, ৯-১১ হার মেনে নেন বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১৭ নম্বর সৌরভ।
বিশ্ব স্কোয়াশে এক সময় দাপট ছিল পাকিস্তানের। ব্রাজিলের ফুটবল যা, পাকিস্তানের স্কোয়াশ তাই ছিল। ফুটবলের মেসি আর পেলে আলাদা দেশের হলেও স্কোয়াশ-দুনিয়ার পেলে-মেসি যাঁরা সেই জাহাঙ্গির খান আর জানশের খান উঠে এসেছিলেন একটাই দেশ থেকে পাকিস্তান। জাহাঙ্গিরকে তো অনেকেই সর্বকালের সেরা স্কোয়াশ প্লেয়ার ধরেন। বিশ্ব ওপেন ছ’বার আর ব্রিটিশ ওপেন রেকর্ড সংখ্যক দশ বার জেতার পাশাপাশি জাহাঙ্গিরের এমন একটা রেকর্ড রয়েছে যা এখনও অটুট। ১৯৮১-’৮৬ ছ’বছরে টানা ৫৫৫ ম্যাচ অপরাজিত ছিলেন তিনি। সর্বোচ্চ স্তরের যে কোনও খেলায় যা সর্বাধিক ম্যাচে অপরাজিত থাকার বিশ্বরেকর্ড। |
জাহাঙ্গিরের পর বিশ্ব স্কোয়াশ শাসন করেছেন জানশের। ১৯৮৭-’৯৬-র মধ্যে আটবার বিশ্ব ওপেন আর ছ’বার ব্রিটিশ ওপেন জেতার অসাধারণ নজির আছে তাঁর। জাহাঙ্গির-জানশেরদের সময়ে বিশ্ব ওপেনে শেষ চারে তিন জনই পাকিস্তানের এমনও দেখা গিয়েছে। অথচ এ বার শেষ আটেও জায়গা হয়নি কোনও পাকিস্তানির। অজ্ঞাত কোনও কারণে ভারত থেকে এই পর্যায়ে কোনও প্লেয়ার এত দিন উঠে আসতে পারেনি। সেই প্রতীক্ষা বোধহয় শেষ হল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ভারতীয় কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট সৌরভের হাত ধরে। স্কোয়াশ সার্কিটে ক্ষিপ্রতার জন্য নামডাক থাকা সৌরভ এ দিনও শুরুটা করেছিলেন দ্রুতগতিতে। প্রথম গেমে এক সময় ৯-৬ এগিয়েছিলেন। কিন্তু দাপটটা ধরে রাখতে পারেননি। বিশ্বের এক নম্বর রামি টানা অসাধারণ শটে পয়েন্ট তুলে নেওয়া শুরু করার পাশাপাশি লম্বা র্যালিতেও এগিয়ে যান। তবু মিশরের বিশ্বসেরা তারকা ম্যাচের পর বাঙালি প্রতিপক্ষের প্রশংসা করে বলেছেন, “এ রকম খাঁটি স্কোয়াশ প্লেয়ার আগে দেখিনি। একদম অরিজিনাল।” এবং ভারত থেকে প্রথম বিশ্ব পর্যায়ের স্কোয়াশ তারকা সৌরভ বলেছেন, “প্রথম আর তৃতীয় গেমে খারাপ খেলিনি। তবে প্রথম গেমটা জিততে পারলে হয়তো ম্যাচের ফল অন্য রকম হতে পারত। যাই হোক, যে ভাবে এগোচ্ছি তাতে আমি খুশি।” |