উইকেট পেলেই স্যালুট! আলাপের শুরুতেই বলে দিলেন, “আই ওয়াজ আ মেরিন।”
পহেলগাঁও থেকে পুদুচেরির সচিন-উৎসব লণ্ডভণ্ড করতে ক্যারিবিয়ানদের আস্তিনের তলায় লুকোনো তাস কি ওই মেরিন?
চন্দ্রপলদের অন্দরমহলের খবর যেন সে রকমই। একা গেইলে রক্ষা নেই, সঙ্গে দোসর তাঁর দেশ জামাইকার এক কমান্ডো। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ডারেন স্যামির কথায়, সেই কমান্ডো-ই এই সিরিজে তাঁর দলের ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ’!
তিনি ক্যারিবিয়ান বাঁ-হাতি পেসার শেলডন কটারেল মার্কিন মেরিনের প্রাক্তন কর্মী। একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েও দিলেন সেই তথ্য। তাঁর চেয়েও বড় তথ্য, উইকেট পেলে কিংবা ক্যাচ ধরলে সেলিব্রেশন করার কায়দাটা আম্পায়ারের দিকে ঘুরে স্যালুট ঠোকা। শুক্রবার সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মাঠও যা দেখে ফেলল। প্রস্তুতি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে উত্তরপ্রদেশ ওপেনার তন্ময় শ্রীবাস্তবকে বোল্ড করেই বোলার শেলডনের স্যালুট! |
বুধবারই লা লিগায় রিয়াল-সেভিয়া ম্যাচে নিজের গোলের পর ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটারের উদ্দেশ্যে স্যালুট ঠুকে দুনিয়া জুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এ দিন সল্টলেকে শেলডনের স্যালুট দেখে মাঠেই আলোচনা, তিনি কি রোনাল্ডোর ভক্ত?
মাইকেল হোল্ডিংয়ের দেশের ফাস্ট বোলার আনন্দবাজারের কাছে ফাঁস করেন তাঁর ‘স্যালুট রহস্য’। “রোনাল্ডোর খেলা আমার ভাল লাগে। কিন্তু এই স্যালুটের সঙ্গে ওর কোনও সম্পর্ক নেই,” দিনের শেষে বলছিলেন উসেইন বোল্টের দেশের ছেলে। তা হলে? এ বার শেলডন: “আই ওয়াজ আ মেরিন। নাউ ইন জামাইকান আর্মি। ভারতে এসে আমার প্রথম উইকেট। উইকেট পেলে কিংবা ক্যাচ ধরলে দেশে আমার সেনা-বন্ধুদের সাফল্য উৎসর্গ করি এ ভাবেই।”
ইডেন কিংবা মুম্বইয়ে যদি সচিনকে আউট করেন, তা হলে কি তখন গ্যালারির দিকে ফিরে এ ভাবেই স্যালুট করবেন? “নিয়ম তো সব জায়গাতেই এক।” তার পরেই হয়তো এই মন্তব্যের প্রভাব মনে করে জামাইকান তরুণের নতুন জবাব, “নো কমেন্টস।” ম্যাচে অবশ্য সল্টলেকের মন্থর পিচেও বেশ কয়েকটা ডেলিভারি সাবাইনা পার্ক-ঘরানা মেনে ব্যাটসম্যানের বুকের কাছে তুললেন। বল একটু পুরনো হলে গতির সঙ্গে রিভার্স সুইং-ও মেশালেন। যার ধাক্কায় ক্যারিবিয়ানদের ৪৬৬ রানের জবাবে উত্তরপ্রদেশ দ্বিতীয় দিনে ২০৬-৫।
এ দিন খেলা দেখতে আসা হাজার খানেক শিক্ষার্থী ক্রিকেটারকে আরও একজন ক্রিকেট বিনোদন উপহার দিলেন। শেলডনের দেশোয়ালি ক্রিস গেইল। শেষের দিকে তিনি বল করতে আসামাত্র মাঠ জুড়ে হল্লা। প্রাক্তন নাইট রাইডার্স ওপেনার উইকেট তুলে ভক্তদের মন ভরাতে না পারলেও তাঁদের দিকে হাত নাড়তেই হল্লার ডেসিবেল বাড়ল আরও কয়েক গুণ।
তবে শুধুই বোধহয় বিনোদন। কারণ, শেলডন, বেস্ট, পারমল-রা হোল্ডিং, মার্শালদের কাছে দক্ষতায় স্রেফ বামন। এ দিন যেমন ক্যারিবিয়ান পেস অ্যাটাক অবলীলায় খেলে দিলেন কোনও এক পরবিন্দর সিংহ। সচিন-কোহলিদের সামনে কী হবে? শেলডনরা বলছেন, “সেটাই তো চ্যালেঞ্জ।” ‘চ্যালেঞ্জের’ মোকাবিলা করতে লখনউ ঘুরে শহরে পা দিয়েই ম্যানেজার রিচি রিচার্ডসন পুরোদমে ছক সাজাতে নেমে পড়লেন। সকালে চন্দ্রপলের শতরান (১১২) ক্যারিবিয়ান ম্যানেজারের মুখে হাসি ফোটালেও বোলিং কিন্তু সেই হাসি ধরে রাখতে ব্যর্থ। লোকাল ম্যানেজার জানতে চেয়েছিলেন দেওয়ালিতে আলোর শহর ঘুরে দেখবেন কি না। যা তৎক্ষণাৎ নাকচ করে রিচার্ডসন নিজেদের বোলিংয়ের হারানো আলো ফিরিয়ে আনতে ব্যস্ত। |