শনিবার সিরিজের নির্ণায়ক ম্যাচে অনেক কারণেই ভারত ফেভারিট। মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটপ্রেমীরা আর একটা রানের উৎসব দেখতে চলেছেন।
সিরিজে দু’দলের বোলিংই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সার্কেলে পাঁচ জন ফিল্ডার আর দুটো নতুন বল এই দুই নিয়মের জন্য এখন কোনও স্কোরই নিরাপদ নয়। এমনিই বেঙ্গালুরুর মাঠে বেশি রান ওঠে। ২০১১ বিশ্বকাপে ভারত-ইংল্যান্ড, ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড ম্যাচগুলো তার প্রমাণ। টস জিতে যে কোনও দলই রান তাড়া করতে চাইবে। কারণ ভারত হোক বা অস্ট্রেলিয়া, সিরিজে কিন্তু ব্যাটিংই তফাত গড়ে দিচ্ছে।
তরুণ ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ভয়ডরহীন খেলছে। বিশেষ করে শিখর ধবন, রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলি। কোহলির কথা আলাদা করে বলতেই হয়। মনে হচ্ছে প্রচুর সময় নিয়ে শটগুলো খেলছে ও। ওর সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হল বোলারদের উপর কর্তৃত্ব রেখে নিজের ইনিংস গড়া। বিপক্ষ ওকে বুঝে ওঠার আগেই ম্যাচ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে বিরাট। অভিষেকের পর থেকেই বিরাট বুঝিয়েছে যে, ও খুব স্পেশ্যাল এক প্রতিভা। প্রতিটা ম্যাচে যে উন্নতি করে চলেছে।
অস্ট্রেলিয়া আর সিরিজ জয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিরাট। ওকে আউট করার রাস্তা বের না করলে অস্ট্রেলিয়ার কাজটা কিন্তু খুব কঠিন হয়ে যাবে। রায়না-যুবরাজ স্বস্তিতে থাকবে কারণ এই ম্যাচে মিচেল জনসন নেই। অস্ট্রেলীয় বোলিং ওর বাড়তি পেসটা মিস করবে। তা ছাড়া বাঁ-হাতি মিচেলের স্বাভাবিক অ্যাঙ্গেলটা যুবি আর রায়নাকে বিপদে ফেলে দিচ্ছিল।
ভারতীয় ব্যাটিংকে এখন বেশ থিতু দেখাচ্ছে। তবে আমি নিশ্চিত, টিমের বোলিং নিয়ে ধোনি চিন্তিত। আশা করেছিলাম নাগপুরের উইকেটে স্পিনাররা আরও ভাল করবে। কারণ ওখানকার স্লো পিচ স্পিনে সাহায্য করছিল আর বেশ আগে থেকেই বল টার্ন করছিল। এ রকম ট্র্যাকে কিন্তু তিন স্পিনারের এক জনও বিপক্ষকে বিপদে ফেলতে পারল না। কাঁধের চোটের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট টিমে রবীন্দ্র জাডেজা নেই। দেখা যাক বেঙ্গালুরুতে খেলে কি না। যদি ও না খেলে, তা হলে ধোনি কিন্তু সমস্যায় পড়বে। এই সিরিজে জাডেজাই ছিল ধোনির সেরা বোলার। ওর দশটা ওভার খুব জরুরি হতে চলেছে। নাগপুরের ম্যাচটায় যেমন জাডেজার শেষ ওভারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এই সিরিজের আগাগোড়া ব্যাটিংই কর্তৃত্ব রেখে গিয়েছে। তাই প্রতিটা রানই খুব জরুরি।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে জর্জ বেইলি একটা বড় আবিষ্কার। অসাধারণ ব্যাটিং। সিরিজে অস্ট্রেলীয় ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ কিন্তু বেইলিই। বাকিরা প্রতি ম্যাচে ওকে ঘিরে খেলেছে। জনসন ছাড়া এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কোনও বোলার প্রভাব ফেলতে পারেনি। শেষ ম্যাচে জনসন নেই। ভারতীয় ব্যাটিং গর্জন কে থামাবে, বেইলি নিশ্চয়ই এখন তার উত্তর খুঁজতে ব্যাস্ত! |