জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল কোচবিহারে। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া চলার সময়েই এক পঞ্চায়েত সদস্যা বেরিয়ে এসে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন নিয়ে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সে সময়ে দলের জেলা সভাপতি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষও কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনে ক্ষুব্ধ দলের জেলা পরিষদের সদস্য হাসিনা রব্বানি দাবি করেন, কর্মাধ্যক্ষ বাছাই করতে মাথাভাঙা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্যদের বঞ্চিত করা হয়েছে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে বলেন, “জেলা নেতৃত্ব মাথাভাঙা ১ ব্লককে বঞ্চিত করছে। এলাকার ৩ সদস্যের মধ্যে কাউকে কর্মাধ্যক্ষ করা হয়নি।”
এদিনের ঘটনায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বস্তিতে। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মাথাভাঙা ১ থেকে সহ সভাধিপতি নির্বাচন করা হয়েছে। কাজেই অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। সব দিক বিবেচনা করে, যোগ্য সদস্যদের কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারও ক্ষোভের কিছু নেই। সভাধিপতি যে ব্লকের সে ব্লকের কোনও কর্মাধ্যক্ষ নেই।” তৃণমূল সূত্রে খবর জেলা পরিষদ সদস্যরা পরিকল্পনা করে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন-এর এলাকা মাথাভাঙা ১কে বঞ্চিত করেছে। যদিও জেলা সভাপতি দাবি করেছেন, “ওই ব্লকে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন রয়েছেন। সে কারণে উন্নয়ন ব্যাহত হবে এ কথা ঠিক নয়। উনি নিজে এলাকার উন্নয়নের কাজে রত।” বনমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, “একটি বৈঠকে ব্যস্ত আছি। এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না।”
এ দিন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হন চৈতি বড়ুয়া, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মাধ্যক্ষ সুশ্চিস্মিতা দেবশর্মা নির্বাচিত হয়েছেন। পাশাপাশি বন-এর দায়িত্ব পরিমল বর্মন, শিক্ষার দায়িত্ব মুক্তিপদ মণ্ডল, খাদ্য ফাল্গুনি রায়, শিশু ও নারী কল্যাণ সামিমা সাম্মী, কৃষি মমতাজ বেগম, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ আবেদ আলি মিয়াঁ, বিদ্যুৎ ও ক্ষুদ্র শিল্প বিষয়ক গজেন্দ্র নাথ বর্মন দায়িত্ব নিয়েছেন।
মাথাভাঙা ১ ব্লক থেকে হাসিনা রব্বানি বেগম সহ সুমিত্রা বর্মন এবং নজরুল হক জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, মাথাভাঙার ওই এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াই চলছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। নজরুলকে খাদ্য সরবরাহ স্থায়ী সমিতির সদস্য করার সিদ্ধান্ত হলেও তিনি মেনে নেননি। তিনি তিনি পূর্ত কর্মাধক্ষ্য পদের দাবি করেন। তিনি বলেন, “ছোট থেকে রাজনীতি করি। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে কাজ করেছি। যে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছিল, সেখানে কাজের জায়গা কম। তাই রাজি হইনি।” ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মজিদুল হক বলেন, “এতে উন্নয়ন ব্যাহত হবে মনে করছি।” |