এনআইএ-র হাত ফস্কে পালাল জঙ্গি, ধৃত কানপুরে
নআইএ হেফাজত থেকে পালিয়েছিল পটনা বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃত জঙ্গি। গতকাল গভীর রাতে মুজফ্ফরপুরের মোতিঝিল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। আজ দুপুরে কানপুরের কাছে পাঙ্কি স্টেশনে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে ফের তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কী ভাবে গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়েছিল ওই ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ জঙ্গি?
পুলিশ সূত্রের খবর, গতকাল দ্বারভাঙা থেকে গ্রেফতার করা হয় মেহের আলমকে। মুজফ্ফরপুরে একটি বাড়িতে তল্লাশির জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাতে ওই শহরের মোতিঝিল এলাকায় এনআইএ-র একটি ‘সেফ হাউসে’ নিয়ে গিয়ে মেহেরকে জেরা করছিলেন তদন্তকারীরা। ঘণ্টাদশেক ওই জঙ্গির সঙ্গে কথাবার্তা বলেন তাঁরা। এক সময় শৌচাগারে যেতে চায় মেহের। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত জঙ্গিকে একাই সেখানে যেতে দেওয়া হয়েছিল। সেই সুযোগই নেয় মেহের। কিছুক্ষণ পরও সে না-ফেরায় হুঁশ হয় গোয়েন্দাদের। দরজা ভেঙে শৌচাগারে ঢুকে তাঁরা দেখেন, জানালা ভেঙে পালিয়েছে ওই জঙ্গি। সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হয়। দায়ের করা হয় এফআইআর। বিহার পুলিশের চারটি দল মেহেরের খোঁজ শুরু করে। আজ দুপুরে কানপুরের কাছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখার (এটিএস) অফিসাররা তাকে গ্রেফতার করেন।
তবে এনআইএ দাবি করেছে, মেহেরকে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণ কাণ্ডে সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়েছিল। এনআইএ দল পটনায় আছে শুনে সে সেখানেই এসে জানায়, পটনা কাণ্ডে অভিযুক্ত হায়দরকে সে চেনে। হায়দর মজফ্ফরপুরে লুকিয়ে আছে। তাই তাকে নিয়ে মুজফ্ফরপুরে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। পরে শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে পালায় সে। এনআইএ মেহেরকে গ্রেফতার করেনি। তাই তাদের হেফাজত থেকে মেহেরের উধাও হওয়ার প্রশ্ন নেই।
পটনায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ-কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গতকাল নয়াদিল্লি বিমানবন্দর থেকে আরও একজনকে আটক করে এনআইএ। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের খবর, তার নাম মহম্মদ আফজল ওরফে আফতাব। পটনায় হামলার ঘটনায় রাঁচি থেকে ধৃত উজ্জয়ের আহমেদের আত্মীয় আফতাব। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ সংগঠনকে টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করত সে। আফতাবের বাড়িও মুজফ্ফরপুরের সৈয়দ কলোনিতে। আজ সেখানে তল্লাশি চালিয়ে ল্যাপটপ, পেন-ড্রাইভ, ইসলাম সংক্রান্ত পত্রিকা এবং কয়েকটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। জেরায় আফতাব জানায়, পাকিস্তানে তার শ্বশুরবাড়ি। স্ত্রী সেখান থেকে ভারতে ফিরছিলেন। তাকে বাড়ি নিয়ে যেতেই সে বিমানবন্দরে গিয়েছিল।
এনআইএ-র দাবি, জঙ্গি কার্যকলাপের জন্যই পাকিস্তানের পাত্রীকে বিয়ে করেছিল আফতাব। কয়েকবার ওই দেশে গিয়ে অন্য জঙ্গি সংগঠনের নেতা-সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সে। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের হিসেব দেখছেন গোয়েন্দারা। রাঁচির বাসিন্দা, ধৃত ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ জঙ্গি ইমতিয়াজ আনসারির সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল আফতাবের। এনআইএ জানিয়েছে, মুজফ্ফরপুরে তিনটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল তার। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য সে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও চালাত।
ইমতিয়াজের পরিজনরা আজ পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে একবার গিয়েছিল জঙ্গিনেতা ইয়াসিন ভটকল। এনআইএ-র জেরায় মহম্মদ এরশাদ জানিয়েছে, পটনায় ধারবাহিক বিস্ফোরণের আগে শহরের কয়েকটি জায়গা তারা ঘুরে দেখে যায়। রেল স্টেশন, গাঁধী ময়দানেও নজরদারি চালানো হয়। বিস্ফোরণের পরিকল্পনা হয়েছিল মাসদু’য়েক আগে। হামলার দায়িত্ব দেওয়া হয় জঙ্গি সংগঠনটির ‘রাঁচি মডিউল’-এর ২০ জন সদস্যের উপর। ওই মডিউলে শিক্ষিত তরুণ, যুবকদের সদস্য করার ‘কাজ’ করত এরশাদ।
রাঁচি পুলিশ জানিয়েছে, এনআইএ-র দেওয়া তথ্যে জানা গিয়েছে, দিল্লি, বুদ্ধগয়া মহাবিহারে বিস্ফোরণেও জড়িত ছিল ডোরাণ্ডার বাসিন্দা উজ্জয়ের। তেহসিন আখতারের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই তার কথা হত। রাঁচিতে এসেই তার সঙ্গে দেখা করত তেহসিন। যে পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। খবরের কাগজের কর্মী উজ্জয়েরের এই পরিচয়ে হতবাক মণিটোলার ফিরদৌসনগরের বাসিন্দারা। তাঁর স্ত্রী ফাতিমা জানিয়েছেন, চাকরিসূত্রে ১৯৯৫-৯৬ সালে ইথিওপিয়া গিয়েছিল উজ্জয়ের। ফাতিমা আদ্দিস আবাবার বাসিন্দা ছিলেন। সেখানেই দু’জনের পরিচয় হয়। সেখানেই বিয়ে। ২০০০ সাল পর্যন্ত পরিবার নিয়ে ইথিওপিয়াতেই ছিল উজ্জয়ের। ফাতিমার বক্তব্য, “আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে।”

এই সংক্রান্ত অন্য খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.