গঙ্গারামপুরের মণ্ডপ কাণ্ডে অবশেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের চেষ্টার মামলা দায়ের করল পুলিশ। সেই সঙ্গে নিহতের জ্যাঠা লিখিত ভাবে থানায় যৌন নির্যাতনের অভিযোগ জমা দিলেও তা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি কেন সেই প্রশ্নও উঠল আদালতে। যে পুজো মণ্ডপে ঘটনাটি ঘটে, সেই ক্লাবের সম্পাদকের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার কেন মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে প্রশ্ন উঠল তা নিয়েও। দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী রঞ্জন পাণ্ডে এই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “শুনানিতে বিচারকের কাছে মামলার তদন্তের প্রেক্ষাপট বোঝাতেই ওই প্রশ্ন তুলেছি। কারণ, নিহত মহিলার জ্যাঠার নির্দিষ্ট অভিযোগ করলেও সেই ভিত্তিতে পুলিশ মামলা করেনি। যে মণ্ডপে ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশ দাবি করছে, সেই ক্লাবের সম্পাদকের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি প্রথমে শুরু হয়েছে। তাই পুলিশি তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।” রঞ্জনবাবু আদালতে দাবি করেন, তাঁর মক্কেলরা নির্দোষ। জামিনের আর্জি খারিজ করে আদালত ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
মহাষ্টমীর রাতে মণ্ডপে মানসিক ভারসাম্যহীন ২৬ বছরের স্বামীবিচ্ছিন্না এক তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ ৫ দিন আগে টিঙ্কু ওরফে দেবাশিস সিংহ ও পলাশ চক্রবর্তীকে পুলিশ তরুণীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে। কিন্তু নিহত তরুণীর শরীরের নানা অত্যাচারের চিহ্ন থাকলেও পুলিশ কেন যৌন নির্যাতনের ধারা প্রয়োগ করেনি তা নিয়ে নানা মহলে আলোচনা হয়। পুলিশ জানায়, এদিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ৩৭৬বি ও ৫১১ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী জনার্দন সিংহ জামিনের বিরোধিতা করেন। তাঁর বক্তব্য, “মামলার তদন্ত চলছে। কেস ডায়েরি দ্রুত জমা দিতে হবে” শুনানির পরে ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশিস চৌধুরী অভিযুক্তদের জামিন আর্জি নাকচ করে জেল হাজত, ৮ নভেম্বর অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করে কেস ডায়েরি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
নিহতের জ্যাঠা এখন অসুস্থ। তবে এ দিন আত্মীয়রা জানান, শেষ পর্যন্ত পুলিশ যৌন নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তদন্তে সমস্ত কিছুই প্রকাশিত হবে। লুকানোর কিছু নেই।” এ দিন বিকেল ৪টা নাগাদ মহকুমা আদালতে ধৃত দুই অভিযুক্তকে পুলিশ হাজির করায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কালদিঘির ওই ক্লাব সম্পাদক সন্তোষ দাস বলেন, “নবমীর সকালে খবর পেয়ে মণ্ডপে গিয়ে দেখি ওই মহিলার মৃতদেহ পড়ে আছে। কে বা কারা ওই মহিলাকে খুন করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে দোষীদের ধরার দাবি করা হয়। এ বার গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগের মামলা করে তদন্তে নামল পুলিশ।” |