শুধু জেলা ও মহকুমা নয়। প্রতিটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘ফেয়ারপ্রাইস’ ওষুধের দোকান চালু করতে চায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ। মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের এক বৈঠকে স্বাস্থ্য পরিষেবা বৃদ্ধির পরিকল্পনায় রাজ্য সরকারের কাছে প্রকল্প জমা দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ২৯টি ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে মহকুমা ও ব্লক স্বাস্থ্য আধাকারিকের মাধ্যেমে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিপিএল তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কিছু ওষুধ বেসরকারি দোকান থেকেই কিনতে হয়। সেক্ষেত্রে দুঃস্থ গরিব মানুষরা বেশি দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য হন। সেই কারণেই প্রতিটি ব্লকে একটি করে ‘ফেয়ারপ্রাইস’ ওষুধের দোকান করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২৯টি ব্লকের মধ্যে ২০টিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন এলাকার গোসাবা, বাসন্তী, সাগর, নামখানা। এবং কুলপি, ফলতা, ডায়মন্ড হারবার ১ও ২, জয়নগর১ ও ২, ভাঙড় ১ ও ২, বজবজ ১ ও ২, বিষ্ণপুর ১ও ২ নম্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যও পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন ওই সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এক জন চিকিৎসক রয়েছেন। সে ক্ষেত্রে আরও একজন চিকিৎসক বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এবং নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করা হবে বলে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় সাপের কামড়ে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ সুন্দরবনের অধিকাংশ দ্বীপে বিদ্যুৎ নেই। সে ক্ষেত্রে সাপের কামড়ের মূল ওষুধ অ্যান্টি-ভেনাম সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থাই নেই। ওই ওষুধ সংরক্ষণের বিষয়টিও নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তরুণ রায় বলেন, “ব্লকস্তর থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত স্বাস্থ্য পরিষেবায় কোথায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে। সেই বিষয়ে একটি মাষ্টারপ্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। ওই মাষ্টারপ্ল্যান তৈরির পর তা রাজ্য সরকারের কাছে পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে আবেদন করা হবে।”
তরুণবাবুর সংযোজন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর জন্য রাজ্য সরকার নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আমরা পরিকাঠামোর গাফিলতি গুলি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যেমে স্বাস্থ্য পরিষেবা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে।” |