বেআইনি মিছিল করার মামলায় জেরা করতে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং সিপিএমের কার্যনির্বাহী জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার-সহ তাদের ১০ জন নেতাকে থানায় তলব করলেন এক সাব ইন্সপেক্টর। গত ২৫ অক্টোবর আশিস চক্রবর্তী নামে শিলিগুড়ি থানার ওই পুলিশ আধিকারিক সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে ওই নেতাদের হাজির করানোর চিঠি দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী ১০ নভেম্বর বেলা ১২টা নাগাদ তাঁদের শিলিগুড়ি থনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। তা নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রীও। তাঁদের অভিযোগ, এক জন প্রাক্তন মন্ত্রীকে এ ভাবে ডেকে পাঠানো শোভন নয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন থাকলে পুলিশ কমিশনার বা পদস্থ কোনও পুলিশ আধিকারিক যোগাযোগ করতেই পারতেন। সিপিএমের অভিযোগ, পুলিশের একাংশ নিরপেক্ষতা ভুলে খোলাখুলি তৃণমূলের নেতাদের খুশি করার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছেন।
পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “কে চিঠি পাঠিয়েছেন সঠিক জানা নেই। তবে ওই মামলার তদন্ত সম্পূর্ণ করতে বলা হয়। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের তরফে সাধারণত চিঠি পাঠানো হয়। আমরা সরাসরি তদন্তের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করি না। তবে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের সিনিয়র অফিসার কেউ থাকবেন।”
প্রাক্তন মন্ত্রীর মতো একজনকে সাব ইন্সপেক্টর পদের কেউ চিঠি পাঠিয়ে থানায় ডাকার ঘটনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অশোকবাবুও। তাঁর কথায়, “এটা কাম্য নয়। বর্তমান সরকারের পুলিশ-প্রশাসন ভুলে যাচ্ছে কোনটা শোভন আর কোনটা অশোভন। পুলিশ কমিশনার বা তাঁর মতো কোনও পুলিশ কর্তা যোগাযোগ করতেই পারতেন।” তাঁর কটাক্ষ, থানা যখন তৃণমূলের পার্টি অফিস হয়ে যায়, তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটাই স্বাভাবিক।
যদিও এ ব্যাপারে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর কথায়, “পুলিশ-প্রশাসনের কোনও কাজে কোনও রকম হস্তক্ষেপ আমরা করি না। এমনকী, তার জন্য রাজ্যে ক্ষমতাসীন হলেও অনেক জায়গায় শাসকদলের নেতাদের নামে নানা অভিযোগে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ যা ভাল মনে করছে, তাদের মতো করে তদন্ত করছে। তা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ এপ্রিল বিকেল ৬টা ২০ থেকে হিলকার্ট রোড অন্তত কুড়ি মিনিট আটকে মিছিল করা হয় সিপিএমের তরফে। ওই মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না। মিছিলটি হিলকার্ট রোডে সিপিএমের পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে সেবক মোড় এবং সেখান থেকে আবার দলীয় কার্যালয়ে ফেরে। বিনা অনুমতিতে মিছিল করে শহরের ব্যস্ততম ওই রাস্তা এ ভাবে আটকে রাখা নিয়ে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা শুরু করে। ওই মামলাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ অশোকবাবু, জীবেশবাবু এবং অন্যান্যদের ডেকে পাঠিয়েছে। বাকিদের মধ্যে রয়েছেন, সিপিএমের যুব নেতা শঙ্কর ঘোষ, সমর দাস, কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল, শালিনী ডালমিয়া, জয় চক্রবর্তী, মুকুল সেনগুপ্ত, প্রাক্তন কাউন্সিলর পার্থ চৌধুরী ও যুব নেতা সঞ্জয় টিব্রেয়াল। |