বাজারে অভিযান, গ্রেফতার ৩ ব্যবসায়ী
বারবার সতর্ক করার পরও অতিরিক্ত দামে আলু এবং অন্যান্য সব্জি বিক্রি চলছেই বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন। তা রোখার জন্য কড়া ব্যবস্থা নিতে এ বার ৩ ব্যবসায়ীকে ধরে পুলিশ। বুধবার শিলিগুড়ির রথখোলা রবীন্দ্রনগর বাজারে অভিযান চালিয়ে টাস্ক ফোর্স তাঁদের ধরে। তাঁরা দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারি সীমা জানতেন না দাবি করে পরে ব্যক্তিগত বন্ডে ছাড়া পান। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম স্বপন দাস, মনোরঞ্জন হালদার এবং জিতেন রায়। এ দিন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সপ্তর্ষি নাগের নেতৃত্বে টাস্ক ফোসের্র প্রতিনিধিরা ওই বাজারে যান। ওই ব্যবসায়ী এবং খদ্দেরদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। রাজ্য সরকার খুচরো বাজারে আলুর সর্বোচ্চ দাম ১৪ টাকা বেঁধে দিলেও ওই ব্যবসায়ীরা কেন ১৮ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তা জানতে চান টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধিরা। স্বপনবাবু দাবি করেন, বিধান মার্কেটের পাইকারি বাজার থেকে তিনি ১৬ টাকা ১৮ টাকায় কিনে আনছেন। অথচ সেই রসিদও তিনি বা অন্য ব্যবসায়ীরা দেখাতে পারেননি। স্বপনবাবু জিতেনবাবুদের মতো ব্যবসায়ীদের একাংশ টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু করেন। প্রশাসনের ভূমিকা নয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রশাসনের তরফে পাইকারি বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলে সরব হন। এর পরেই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পুলিশ বাজারের ওই ব্যবসায়ীদের ধরে। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সপ্তর্ষি নাগ বলেন, “খুচরো বাজারে আলুর কী দাম হবে তা সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে। তার পরেও ব্যবসায়ীদের কেউ তা মানতে না চাইলে ব্যবস্থা নিতেই হবে। বাসিন্দাদের সুবিধা দেখাটাই মুখ্য। দাম নিয়ন্ত্রণে শহরের বাজারে লাগাতার অভিযান চলবে।”

দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগে ধৃত সব্জি ব্যবসায়ীরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন, বাসিন্দাদের অনেকেই। নরেন রায়, হিমাদ্রী পাইনদের মতো বাসিন্দারা জানান, ব্যবসায়ীদের একাংশ যে হারে সব্জির দাম নিচ্ছেন তাতে বাজার করতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। হিমাদ্রীবাবু এ দিন সব্জির চড়া দর দেখে শুধু স্কোয়াশ কিনে বাড়ি ফেরেন। তিনি বলেন, “আলু থেকে ফুলকপি, বাঁধাকপি সবেরই যা দাম তাতে সব্জি কেনা সম্ভব হয়নি। প্রশাসন এ ধরনের কড়া ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের মতো বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বাড়বে।” প্রশাসনের তরফে লাগাতার বাজারে অভিযান চালালে তবেই দাম কমতে পারে বলে তিনি মনে করেন। অপর বাসিন্দা বাদলচন্দ্র দে বলেন, “ওই ব্যবসায়ীদের ধরে পুলিশ ঠিক কাজই করেছে। আমরা দাম নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে কখনও গাড়ির খরচ বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, অসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে সে জন্যই সব্জির দাম বেশি এমন নানা কথা বুঝিয়ে দেন। প্রশাসন যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যথার্থই।” তাঁদের অভিযোগ, পাইকারি বাজারে দামের চেয়ে খুচরো বাজারে জিনিসের দামের কোনও ক্ষেত্রে ৬ টাকা কোনও ক্ষেত্রে ১০ টাকা বা তার চেয়েও বেশি ফারাক। বিধান মার্কেট-সহ শহরের অন্যান্য বাজারগুলিতেও আলু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি দামের চেয়ে এ দিন বেশি দামেই বিক্রি হয়েছে বলে বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন। তা ছাড়া অধিকাংশ বাজারে এখনও সব্জির দাম আশানুরূপ কমেনি। এমনকী প্রতিদিন সব্জির মূল্যের তালিকা টাঙানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের তরফে তালিকা টাঙানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে কৃষি বিপণন বিভাগের আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ওই বিভাগের দায়িত্বে থাকা সহকারি কৃষি বিপণন আধিকারিক কল্যাণ কুমার দাস বলেন, “মঙ্গলবার শেষ বেলায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তালিকা টাঙানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে জানালে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বিভিন্ন বাজারগুলিতে গিয়ে ব্যবসায়ী সমিতিকে তা জানিয়েও দেওয়া হচ্ছে।” তিনি জানান, বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি সবজির বাজার দরের একটি ছোট বোর্ড লাগালেও তা বাসিন্দাদের নজরে পড়ছিল না। তা বদলে বড় বোর্ড বাজারের বিভিন্ন জায়গায় টাঙাতে বলা হয়েছে যাতে সহজেই নজরে পড়ে।”
শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারেও এ দিন আলুর পাইকারি দাম ছিল ১৪-১৬ টাকা। পাহাড়ের আলু ২২-২৪ টাকা। অথচ সরকারি নিদের্শে পাইকারি বাজারে আলুর দাম সর্বোচ্চ ১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারিত করা হয়েছে। অন্য সব্জির দামও নিয়ন্ত্রিত বাজারে গত কয়েক দিনের মতোই বেশি ছিল। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা আশা করছেন দু-এক দিনের মধ্যেই দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
বুধবারের দর
পাইকারি খুচরো

শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারের দর। প্রতি কেজি দর টাকায়। সূত্র: বাজার সমিতি ও প্রশাসন

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.