ভিন রাজ্যমুখি আটক আলুর ট্রাক ছাড়ার ব্যাপারে বুধবারও সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারল না। এর ফলে আলু ব্যবসায়ী এবং চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। বুধবার অভিযোগ উঠল, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আলুর ট্রাক গেলেও পুলিশ ধড়পাকড় শুরু করেছে। তার জেরে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। এ দিন আলুর ট্রাক পুলিশ আটকে দেওয়ায় পুরুলিয়ায় ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি বন্ধের হুমকি দেন। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের কর্তারা হস্তক্ষেপ করলে বিষয়টি মেটে। রাজ্যের কৃষি বিপনন মন্ত্রী অরূপ রায় অবশ্য এ দিন জানিয়েছেন, “বৃহস্পতিবার টাস্ক ফোর্সের বৈঠক আছে। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। সেখানেই নানা জেলার সীমানায় আটকে-পড়া ট্রাক ছাড়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্য সরকার সম্প্রতি ভিন রাজ্যে আলু পাঠানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপর রাজ্যের চারটি জেলার সীমানায় পুলিশ প্রায় দেড়শো আলু বোঝাই ট্রাক আটকে দেয় পুলিশ। ওই ট্রাকগুলি অসম, ঝাড়খন্ড, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশে যাচ্ছিল। ট্রাকগুলি বর্ধমান, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার সীমানায় আটকে দেওয়া হয়। একইভাবে উত্তরবঙ্গেও আলুর ট্রাক আটকে দেওয়া হতে থাকে। সব মিলিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সীমানায় বহু আলু বোঝাই আটকে যায়। এই ঘটনাতেই প্রমাদ গোনেন আলু চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। কারণ আটক আলু পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা সরকারের দ্বারস্থ হন। ব্যবসায়ীদের যুক্তি ছিল, যে সব প্রজাতির আলু অন্য রাজ্যে পাঠানো হচ্ছিল, সেই আলু এই রাজ্যের মানুষ খান না। প্রতিবারই ওইসব আলু অন্য রাজ্যে যায়। তাই এবারও ওইসব প্রজাতির আলু অন্য রাজ্যে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথে পুলিশ আটকে দেয়। এই পুরো বিষয়টি অবশ্য বিবেচনার আশ্বাস দেয় সরকার। যদিও বুধবার পর্যন্ত সরকারি স্তরে এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর মাঝেই ফের আলু নিয়ে অন্য অভিযোগ উঠে এসেছে বুধবার। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আলু এক জেলা থেকে অন্য জেলা যাওয়ার সময়ও এখন পুলিশ আটকাচ্ছে। কোনও বিচার বিবেচনা করছে না পুলিশ। এ দিন বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়ায় যাওয়ার পথে এমনই ৮টি ট্রাক আটক করে পুলিশ। এর প্রতিবাদেই ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি বন্ধের হুমকি দেন। একইভাবে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ আলু বোঝাই দুটি ট্রাক আটকে চালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করে। গোয়ালতোড়ের আলু ব্যবসায়ী শ্যামাপ্রসাদ মণ্ডল অভিযোগ করেন, “এইভাবে চলতে থাকলে সামগ্রিকভাবে আলু বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর অন্য কোনও পথ খোলা থাকবে না।”
|