বিয়েবাড়ি থেকে উঠিয়ে মূক-বধির কিশোরীকে ধর্ষণ
মামার বিয়েতে আসা মূক-বধির কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে নববধূর ভাই ও তার তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ধর্ষণের পরীক্ষার পর পুলিশ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ওই কিশোরীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। তার আগেই অবশ্য অপরাধীদের শনাক্ত করেছে সে।
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ঘটনা। দু’দিন আগেই, মধ্যমগ্রামে ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়ে ফিরে আসার সময়ে এক কিশোরী ফের ধর্ষিত হওয়ায় চাপে পড়ে গিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ-প্রশাসন। পুরো সুস্থ হওয়ার আগেই মেয়েটিকে কেন হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে বুধবারই প্রশ্ন তোলে রাজ্য মহিলা কমিশন। এ বার তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে মূক-বধির কিশোরীটিকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।
বছর সতেরোর ওই কিশোরীর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার নসিমপুরে। মামার বাড়ি বাদুড়িয়ার তিলডাঙায়, কনে বসিরহাটের বড়গোবরা গ্রামের। গত সোমবার পরিবারের সঙ্গে সেখানেই বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল মেয়েটি। সে দিন থেকেই কনের ভাই এব্রাহিম মণ্ডল ও তার বন্ধুরা তাকে উত্ত্যক্ত করছিল বলে অভিযোগ। সে দিন বিয়ের পরে তারা নসিমপুরে ফিরে আসে। কিন্তু পরের দিন বউভাতে এসেও ওই যুবকেরা মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। পরে বর-কনে যখন বড়গোবরায় কনের বাপের বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন মেয়েটি নিখোঁজ হয়ে যায়।
পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার বিকেল ৪টে নাগাদ সকলের ব্যাস্ততার সুযোগ নিয়ে এব্রাহিম ও তার সঙ্গীরা কিশোরীটিকে মোটরকবাইকে তুলে নিয়ে পালায়। বাড়ির লোক বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও হদিস পাননি। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ স্থানীয় বিবিপুর গ্রামের কাছে টাকি রোডে আমবাগানের পাশে কিশোরীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন এলাকার কিছু লোক। মেয়েটি তাঁদের কিছুই বোঝাতে পারেনি। এক জনের মোটরবাইক থামিয়ে তাঁরা মেয়েটিকে তুলে দেন। অনুরোধ, সে যেখানে নামতে চাইবে, সেখানে যেন তাকে নামনো হয়।
রাত ১০টা নাগাদ কিশোরীটিকে বসিরহাটে আড়বালিয়া বকুলতলায় অটোস্ট্যান্ডের কাছে নামিয়ে দেন মোটরবাইক আরোহী। সেখানে নেমে মেয়েটি বমি করতে শুরু করে। তার পোশাক-আশাক ও শারীরিক অবস্থা দেখে তাঁরাই বাড়িতে খবর দেন। বাড়ির লোকজন এসে তাকে নিয়ে যান। পরিবারের দাবি, বাড়ি ফেরার পরই ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরীটি। কিন্তু বাড়ির লোক তাকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে শান্ত করেন। এর পরেই সে আকারে-ইঙ্গিতে জানায়, কী ঘটেছে। রাত ১টা নাগাদ মেয়েটির বাড়ির লোকজন বাদুড়িয়া থানায় অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। এব্রাহিমের পরিবারের দাবি, দিন কয়েক আগে বিয়ে নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলার জেরে ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার এসপি তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “বিয়েবাড়ির ওই ঘটনা শোনার পরে আমরা আর দেরি করিনি। প্রায় সঙ্গে-সঙ্গেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করি।” এব্রাহিম মণ্ডল ছাড়াও উজ্জ্বল মণ্ডল ও আশিক হোসেন নামে দু’জনকে ধরা হয়। তাদের জেরা করে পাকড়াও করা হয় আজহারউদ্দিন মণ্ডল নামে এক জনকে। কিশোরী থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে। মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে আজহারউদ্দিনকে। বুধবার তাদের বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হলে চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার পরে মেয়েটিকে পুলিশই তাকে কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
রাতে কলকাতার নার্সিংহোম সূত্রে জানানো হয়, কিশোরীর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। আকারে-ইঙ্গিতে ডাক্তার-নার্সদের সঙ্গে কথা বলছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মিললেও শারীরিক চোট গুরুতর নয়।






First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.