|
|
|
|
কৌশল বদলাচ্ছে মাওবাদী, বৈঠকে দুই রাজ্যের পুলিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া |
ছত্তীসগঢ়ের সুকমা। ঝাড়খণ্ডের পাকুড়। দুই রাজ্যের দুই সাম্প্রতিক মাওবাদী হানা বুঝিয়ে দিচ্ছিল, মাওবাদীরা কৌশল বদলাচ্ছে। তারা ‘গেরিলা ওয়ারফেয়ার’ থেকে ক্রমে ‘মোবাইল ওয়ারফেয়ার’-এর পথে হাঁটছে। এই কৌশলের শিকার হতে পারে পশ্চিমবঙ্গও। পাল্টা কৌশল ঠিক করতে বুধবার পুরুলিয়ায় এক বিশেষ বৈঠকে বসলেন বাংলা-ঝাড়খণ্ড, এই দুই রাজ্যের পুলিশ কর্তারা। মাওবাদীদের কৌশল মোকাবিলায় এই দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই বৈঠক বলে সূত্রের খবর।
বৈঠকে ছিলেন রাজ্য পুলিশের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত, স্পেশ্যাল আইজি (অপারেশন) অনিল কুমার, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) অজয় নন্দ, ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা এবং ঝাড়খণ্ড পুলিশের ডিআইজি (বোকারো) দেববিহারী শর্মা, ডিআইজি (দুমকা) প্রিয়া দুবে, ডিআইজি (রাঁচি) শীতল ওরাং। এ ছাড়াও ছিলেন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ, সরাইকেলা-খরসঁওয়া, জামতাড়া, ধানবাদ, জামশেদপুর(গ্রামীণ) ও রাঁচি (গ্রামীণ)-এর পুলিশ সুপাররা। পুলিশের আরও পদস্থ কর্তারাও বৈঠকে হাজির ছিলেন। |
পুরুলিয়ায় পুলিশ কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র। |
বৈঠকের পরে আইজি(পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত জানান, মূলত মাওবাদীদের কাযর্কলাপ ও সীমান্তের অপরাধ নিয়ে আলোচনা হযেছে। এর বেশি কিছু তিনি বলতে চাননি। রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, “মাওবাদীরা তাদের কৌশল বদলাচ্ছে। গেরিলা ওয়ারফেয়ারের পথ বদলে তারা মোবাইল ওয়ারফেয়ারের (এক রাজ্যের দলের ভিন্ রাজ্যে গিয়ে হামলা চালানো) কৌশল নিচ্ছে। ছত্তীসগঢ় ও পাকুড়ে ঠিক সেটাই হয়েছে। আমাদের রাজ্যেও এই ধরনের হামলার ঝুঁকি রয়েছে। মাওবাদীদের এই পরিবর্তিত কৌশল নিয়েই বিশদে আলোচনা হয়েছে।” ডিআইজি (দুমকা) প্রিয়া দুবে বলেন, “দুই রাজ্যের মাওবাদীদের নামের তালিকার সঙ্গে তাদের ছবিরও আদানপ্রদান হয়েছে। বিশেষ করে থানা স্তরের আধিকারিকেরা যাতে তাদের চিনতে পারেন।”
এমনিতে, যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের শীর্ষনেতা কিষেণজির মৃত্যুর পরে এ রাজ্যের জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের সংগঠন অনেকটাই দুর্বল। রাজারাম সোরেন ওরফে সাগেন সাঁওতাল, জাগরী বাস্কে, সুচিত্রা মাহাতোর মতো প্রথম সারির একাধিক নেতা-নেত্রী ইতিমধ্যেই আত্মসমর্পন করেছেন। সুদীপ চোংদার, অর্ণব দাম ওরফে বিক্রম, তেলেগু দীপক, অণু ওরফে কল্পনা মাইতি-সহ বহু নেতানেত্রী এখন পুলিশের জালে। এই অবস্থায় কৌশল বদলাচ্ছে মাওবাদীরা। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, আগে মাওবাদীরা যে এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে থাকত, সেই এলাকাতেই মূলত হামলা চালাত। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা বিশেষ কোনও এলাকা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গার বাছাই করা স্কোয়াড সদস্যদের নিয়ে এসে ‘অপারেশন’ চালিয়ে গা ঢাকা দিচ্ছে। সম্প্রতি সুকমা ও পাকুড়ে এই ধরনের কৌশল অবলম্বন করে ‘অপারেশন’ চালিয়েছে মাওবাদীরা।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এই মুহূর্তে মাওবাদীদের সংগঠন দুবর্ল হলেও তাদের আনাগোনার খবর মিলছে। বাংলা-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশার সীমানা বরাবর তারা ফের সংগঠন চাঙ্গা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের গা ছাড়া দেওয়ার বিশেষ সুযোগ নেই।” |
|
|
|
|
|