রেকর্ড অঙ্কে পৌঁছল সেনসেক্স। বুধবার বাজার বন্ধের সময়ে তা প্রায় ১০৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়াল ২১,০৩৩.৯৭ অঙ্কে। প্রায় তিন বছর বাদে উচ্চতার পুরনো রেকর্ড ভাঙল সূচক। এর আগে ২০১০-এর ৫ নভেম্বর সেনসেক্স বন্ধ হয় ২১,০০৪.৯৬ অঙ্কে। অবশ্য ২০০৮-এর ১০ জানুয়ারি ২১,২০৬.৭৭ অঙ্ক ছুঁলেও সেখানে টিকে থাকতে পারেনি সূচক, দিনের শেষে ২১ হাজারের নীচে নেমে আসে।
তবে এই উত্থানকে বাজারের স্বাস্থ্য ফেরা বলে মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তা হলে এর কারণ কী? প্রথমত, বিশ্ব অর্থনীতির হাল অনেকটাই ফিরেছে। বিশেষ করে আমেরিকা মন্দা থেকে বাঁচতে যে-ত্রাণ প্যাকেজ চালু করেছিল, তা এখনই তুলে নিচ্ছে না। এটা শেয়ার বাজারে, বিশেষত বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলিকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, টাকার মূল্য হ্রাস থামাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে-সব পদক্ষেপ করেছে, তার সুফলও মিলেছে। ফলে চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতি আরও বৃদ্ধির যে-সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি, আজ ভারতে আগাম লেনদেনের সেটেলমেন্টের দিন। যে-সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও তা বেচে রেখেছেন তাঁদের আজ ওই সব শেয়ার হস্তান্তর করতে হবে। ফলে তাঁরা বুধবার শেয়ার কিনতে নেমে পড়েন।
তা হলে সমস্যা কোথায়? ভারতের বাজার এখন মূলত দাঁড়িয়ে বিদেশি সংস্থার লগ্নিতে ভর করে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এরা মরসুমি পাখির মতো। অন্য দেশে বেশি লাভের সম্ভাবনা দেখলেই লগ্নি তুলে নেবে। সুমেধা ফিসকাল সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ও অ্যাসোসিয়েশন অফ ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জেস মেম্বার্স অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন সভাপতি বিজয় মুর্মুরিয়া বলেন, “বাজার তেজী হয়েছে বিদেশি সংস্থাগুলির জন্য। সাধারণ লগ্নিকারী প্রায় নেই-ই।” মুর্মুরিয়ার মতো বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনের আগে স্থিতি ফেরার সম্ভাবনা কম। তাও যদি কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার আসে, তবেই।
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি ও স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ বলেন, “ওই সব সংস্থা বিদেশি লগ্নিকারীদের থেকে অর্থ তুলে ভারতে ঢালে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওই টাকা বহু লগ্নিকারীই ফেরত চান। তখন শেয়ার বিক্রি করেই তারা ওই ওই টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করে। তাই আগামী দু’মাসে ভারতে বিদেশি সংস্থার বিনিয়োগ কমার সম্ভাবনা রয়েছে।” |