ছ’টি ট্রাম ডিপোর জমি লিজ দিতে বিজ্ঞপ্তি ১ নভেম্বর
ছ’টি ট্রাম ডিপোর বাড়তি জমি বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে প্রথম দফায় কয়েকশো কোটি টাকা তুলতে চাইছে রাজ্য। রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমগুলির আর্থিক হাল ফেরাতে বাস ও ট্রাম ডিপোর উদ্বৃত্ত জমি বেসরকারি হাতে দেওয়ার ঘোষণা ছিল আগেই। গত অগস্ট মাসে তাতে ছাড়পত্র দেয় মন্ত্রিসভার শিল্প ও পরিকাঠামো বিষয়ক সাব-কমিটি। সেই মতো বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে ১ নভেম্বর বিজ্ঞাপন দিচ্ছে পরিবহণ দফতর।
মঙ্গলবার দফতরের এক কর্তা জানান, প্রথম পর্যায়ে কলকাতা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি)-র ৩৭৩ কাঠা উদ্বৃত্ত জমি কার্যত বিক্রি করে দিতে অর্থাৎ ৯৯ বছরের ‘লিজ’ দিতে চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। ইচ্ছুক ব্যক্তি বা সংস্থাকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ডিপোগুলি কলকাতার এক-এক প্রান্তে। ফলে বাজারের হিসেবে জমির দামও আলাদা-আলাদা। বিজ্ঞাপনে তাই দরপত্র দেওয়ার জন্য কোনও ন্যূনতম দাম (বেস প্রাইস) রাখা হচ্ছে না। জমি নেওয়ার আগ্রহ তৈরি করতে জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন নিয়েও কড়াকড়ি করবে না রাজ্য।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সিটিসি, সিএসটিসি, ডব্লুউবিএসটিসি এবং এসবিএসটিসি-র মতো পরিবহণ নিগমগুলির মোট ২৯টি ডিপোর প্রায় ৯০০ কাঠা উদ্বৃত্ত জমি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে কলকাতায় সিটিসি-র ছ’টি ডিপোর হাতে থাকা ৩৭৩ কাঠা উদ্বৃত্ত জমি দিয়েই বাণিজ্যিকিকরণের নতুন পথে হাঁটা শুরু করছে রাজ্য। ওই ছ’টি ডিপো রয়েছে টালিগঞ্জ, কালিঘাট, বেলগাছিয়া, খিদিরপুর, শ্যামবাজার এবং গ্যালিফ স্ট্রিটে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিজ্ঞাপিত সব জমি হাতবদলের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ নেবে বলে আশা করা যায়।”
কোন ডিপোয় কত
টালিগঞ্জ ২৪১ কাঠা
কালিঘাট ১২ কাঠা
বেলগাছিয়া ৫২ কাঠা
শ্যামবাজার ৩১ কাঠা
গ্যালিফ স্ট্রিট ১৫ কাঠা
খিদিরপুর ২২ কাঠা

কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ওই ৩৭৩ কাঠা জমির দাম কত?
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, প্রতিটি ইচ্ছাপত্রের সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে। অন্যান্য শর্ত মেনে সংশ্লিষ্ট ডিপোর ক্ষেত্রে যে সংস্থা সবচেয়ে বেশি দাম দেবে, তাকেই ওই জমি দেওয়া হবে। তবে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ৩৭৩ কাঠা জমির দাম বাবদ কয়েকশো কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে আশা পরিবহণ দফতরের।
এই নতুন পদক্ষেপ করার আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিটিসি-কর্তৃপক্ষ ছ’টি ডিপোর বাড়তি জমি বিক্রির যাবতীয় স্বত্ব রাজ্য পরিবহণ দফতরের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে ডিপো যেমন ছিল, তেমনই থাকবে। ওই কর্তা জানান, সিটিসি-র অন্যান্য ডিপোর জমিও লিজ দেওয়ার ভাবনা রয়েছে।
লিজচুক্তির দু’রকম ‘মডেল’ তৈরি করেছে পরিবহণ দফতর। প্রথম মডেল অনুযায়ী, ডিপোর কাজে ব্যবহারের জায়গা ছেড়ে দিয়ে বাকি জমি লিজ দেওয়া। প্রথম ধাপে সেই মতো বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় মডেল অনুযায়ী, জমি সরাসরি না দিয়ে ডিপোর উপরে বহুতল করে লিজ দেওয়া হবে। পরের ধাপে সেই মতো বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। তবে সরকার নিজেই বহুতল তৈরি করে দেবে কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
উদ্বৃত্ত জমির কেনার আগ্রহ তৈরি করতে লিজ-চুক্তির শর্ত অনেকটাই শিথিল করেছে রাজ্য সরকার। যেমন, শহরাঞ্চলে জমির উর্ধ্বসীমা আইন অনুযায়ী সাড়ে সাত কাঠার বেশি ফাঁকা জমি রাখার অনুমতি নেই। এ ক্ষেত্রে সরকার নিজেই তার অনুমোদন দেওয়ায় কোনও বেসরকারি সংস্থাকে সমস্যায় পড়তে হবে না। যেমন, বিজ্ঞাপন দেওয়ার আগেই সিটিসি-র ছ’টি ডিপোর সিলিং বহির্ভূত চিহ্নিত জমি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভার সাব কমিটি। চুক্তি অনুযায়ী, জমির মালিক অন্য কাউকে আবার জমি হস্তান্তর (সাব-লিজ) করতে পারবে। এবং এ জন্য সরকারের কোনও রকম আগাম অনুমোদন লাগবে না।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.