রেডার বিগড়ে সঙ্কট বিমানবন্দরে
বিগড়ে গেল রেডার। কলকাতা শহরকে কেন্দ্র ধরে উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম আকাশে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার এলাকায় যে বিমান চলাচল করে, কার্যত তার ছবি মুছে গেল কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর মনিটর থেকে। এই অবস্থায় প্রায় ২২ ঘণ্টা পাইলটদের সঙ্গে শুধুমাত্র রেডিও-বার্তা উপরে ভরসা করে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হল বিমানবন্দরে থাকা এটিসি অফিসারদের। কলকাতার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়ল বহু বিদেশি বিমান। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বিগড়ে যাওয়া ওই রেডারটি ১৯৯৮ সালের। বহু ব্যবহারে জীর্ণ। সেটি আবার বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার বিকেলে। কলকাতার ‘মোনোপালস সেকেন্ডারি সার্ভিলেন্স রেডার’ (এমএসএসআর)-টি আচমকাই বিগড়ে যায়। অন্ধকার নেমে আসে মনিটরে। যে সময়ের ঘটনা, তখন আকাশে অনেক বিমান। এর পরেই পাইলটদের সঙ্গে ক্রমাগত মৌখিক যোগাযোগ করতে শুরু করেন এটিসি অফিসারেরা। কলকাতা বিমানবন্দরের জিএম (এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট) চন্দন সেন বলেন, “পাইলটদের সঙ্গে রেডিও-বার্তার মাধ্যমে ঘনঘন যোগাযোগ করে আমাদের পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে। তার জন্য রাতের শিফ্টে বেশি অফিসারও রাখতে হয়েছিল।”
সাধারণত, রেডারের সাহায্যে কলকাতা বিমানবন্দরে মনিটরের বড় স্ক্রিনে বিন্দুর আকারে ফুটে ওঠে প্রতিটি বিমানের ছবি। তাই দেখে দেখে মাঝ আকাশে দুই বিমানের মধ্যে দূরত্ব ঠিক করে দেন এটিসি অফিসারেরা। কোন বিমান কোন উচ্চতায় উড়বে, তা-ও ঠিক করেন তাঁরা। প্রতি মুহূর্তে প্রতিটি বিমানের গতিবিধি অফিসারদের চোখের সামনে থাকে। ফলে, নিয়ন্ত্রণেরও সুবিধা হয়। প্রতিনিয়ত কোনও না কোনও বিমান কাঙ্ক্ষিত উচ্চতায় (যে উচ্চতায় জ্বালানি সাশ্রয় হয়) উঠতে চায় বা নেমে আসতে চায়। মনিটরের ছবি দেখে সেই বিমানকে কখন উঠতে বা নামতে দেওয়া হবে, তা ঠিক করেন একমাত্র এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারেরাই।
রেডার বিগড়ে যাওয়ায় সোমবার বিকেলে সেই ছবি মুছে যায়। প্রতি দিন গভীর রাতে কলকাতার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যায় অসংখ্য বিদেশি বিমানও। পূর্ব থেকে পশ্চিম গোলার্ধে যাতায়াত করে তারা। আকাশে নির্দিষ্ট করে দেওয়া রুট অনুযায়ী, প্রতিটি বিমানকেই ছুঁয়ে যেতে হয় কলকাতার আকাশ। বেশ কিছুক্ষণ ধরে যোগাযোগ রেখে যেতে হয় কলকাতার এটিসি-র সঙ্গে। সোমবার মাঝ রাতে এই বিদেশি বিমানগুলি কলকাতার আকাশে পৌঁছনোর আগেই অবশ্য জেনে গিয়েছিল সমস্যার কথা। ফলে চাওয়া মাত্রই কাঙ্ক্ষিত উচ্চতায় পৌঁছতে পারেনি তাদের অনেকে। দূরত্ব বাড়িয়ে দিতে হয়েছে দুই বিমানের মধ্যেও।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতার দক্ষিণ আকাশের ছবি দেখা যায় ওড়িশায় ব্রহ্মপুরে বসানো রেডার থেকে। পুজোর সময়ে ওড়িশায় ঝড়ের জন্য সেটি প্রায় ১২ দিন অকেজো ছিল। ২৪ তারিখ থেকে সেটি সচল হয়েছে। তার পরে সোমবারের এই সমস্যা। এক অফিসারের কথায়, “অ্যাপ্রোচ রেডার একটি আছে। তবে, সেটি প্রধানত কলকাতায় নামতে আসা বা কলকাতা থেকে উড়ে যাওয়া বিমানের গতিবিধির ছবি পাঠায়। কারণ তার সীমা কলকাতা থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে। সোমবার বিকেলের পরে সেই অ্যাপ্রোচ রেডারের ছবি অবশ্য মিলেছে। কিন্তু, আমাদের মূল ভরসা এই সেকেন্ডারি রেডারটিই। সেটিই বিগড়ে যায়।”
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, ১৯৯৮ সালের এই রেডারটি সরিয়ে ফেলে নতুন রেডার বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু, সেই রেডারটি কাজ শুরু করতে এখনও তিন মাস বাকি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.