বড় বড় গর্তে মুখ ঢেকেছে ১২ কিলোমিটার পথ। ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক ডায়মন্ড হারবার রোডের তারাতলা থেকে জোকা পর্যন্ত রাস্তার এমনই হাল। ওই পথ এখনও পূর্ত দফতরের অধীনে। তার মধ্যে জোকা থেকে পাঠকপাড়া পর্যন্ত মেট্রোর কাজ চলছে। ওই এলাকায় ৪০ ফুট চওড়া ডায়মন্ড হারবার রোডের ১২ ফুট মেট্রে দখল করে কাজ করছে। দু’পাশের ১৪ ফুট রাস্তা ভরে গিয়েছে খানাখন্দে।
ডায়মন্ড হারবার রোডের শীলপাড়া, পল্লিমঙ্গল, সখেরবাজার, পঞ্চাননতলা, পোড়া অশ্বত্থতলা এলাকায় বড় বড় গর্ত। এক বেসরকারি বাসের চালক বললেন, “জোকার পর থেকে ১০ কিমির বেশি গতিতে গাড়ি চালানো বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। হয় দুর্ঘটনা ঘটবে, নয়তো গাড়ি গর্তে পড়ে বিকল হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছি।” পল্লিমঙ্গল এলাকায় বিরাট গর্তে পড়ে একাধিক বার অটো উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। মাঝেমধ্যে ওই গর্তে পড়ে বাস-লরি বিকলও হচ্ছে। |
বেহালার বেহাল পথ। ছবি: অরুণ লোধ। |
ডায়মন্ড হারবার রোডের যানজটের চাপ এড়াতে জেমস লং সরণি তৈরি করা হয়। তারাতলা থেকে ডায়মন্ড পার্ক পর্যন্ত প্রায় ১২ কিমি ওই রাস্তার বিভিন্ন এলাকার অবস্থাও খারাপ। এক দিকের রাস্তা বন্ধ করে সংস্কারের কাজ চলছে, আর এক দিকের এক ফালি রাস্তার বেহাল অবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতার সংযোগকারী রাস্তা ডায়মন্ড হারবার রোড। দিনের বেলা ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বাস চলে। কিন্তু বেহাল রাস্তার কারণে অধিকাংশ বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাস্তার জন্য এক দিকে যেমন যানজট বেড়েছে, অন্য দিকে তেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঠাকুরপুকুর এলাকার বাসিন্দা নীলিমা সেন বলেন, “ছেলে-মেয়ে স্কুল থেকে না ফেরা পর্যন্ত স্বস্তি থাকে না। সব সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভয়ে ভয়ে থাকি। আকছার দুর্ঘটনাও ঘটছে। রোজই কেউ না কেউ জখম হয়ে বাড়ি ফিরছে। আমরা আতঙ্কিত।”
ডায়মন্ড হারবার রোডের পাশাপাশি জেমস লং সরণিও পূর্ত দফতরে অধীনে রয়েছে। দফতরের বাস্তুকারদের বক্তব্য, অনবরত বৃষ্টির কারণেই ডায়মন্ড হারবার রোডের সংস্কারের কাজ ঠিক মতো করা যাচ্ছে না। কিছুটা সংস্কারের পরেই একটানা বৃষ্টিতে সব কিছু ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি পুরোপুরি কমলে ফের রাস্তা সংস্কারের কাজ করা হবে। জেমস লং সরণির একই অবস্থা। রাস্তার এক দিকের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে তবে অন্য দিকের কাজ হবে। পাঠকপাড়া থেকে জোকা পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবার রোডের যে অংশটিতে মেট্রোর সম্প্রসারণের কাজ চলছে, সেই অংশটি সংস্কারের দায়িত্ব মেট্রোরেলের বলে জানিয়েছেন পূর্ত দফতরের কর্তারা। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পরেই সেই কাজ হবে বলে জানিয়েছেন মেট্রোরেল-কর্তৃপক্ষ। |