র‌্যাগিংয়ের শাস্তি নিয়ে সুর নরম যাদবপুরের অস্থায়ী উপাচার্যের
পূর্ববর্তী উপাচার্যের সঙ্গে শেষ বৈঠকে তাঁর জোরালো দাবি ছিল, র্যাগিংয়ে জড়িত ছাত্রদের শাস্তি লাঘব করা। সে দিন আলাপ-আলোচনা প্রায় বাদানুবাদের পর্যায়ে পৌঁছয় বলে বিশ্ববিদালয় সূত্রে জানা গিয়েছিল। উপাচার্য শৌভিক ভট্টাচার্যের পদত্যাগের পরে সোমবার যাদবপুরের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে অভিজিৎ চক্রবর্তী ওই র‌্যাগিংয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়ে দিলেন, পড়ুয়াদের ক্ষতি হোক, এমন কিছু করার পক্ষপাতী তিনি নন।
এক দল ছাত্র পঞ্চাশ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখার পরেও শৌভিকবাবু তাঁর সিদ্ধান্ত বদলাননি। কারণ, তাঁর মত ছিল, এতে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি অবশ্য তিনি গড়ে দেন। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ওই কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ার কথা। তার আগেই এ দিন উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে অভিজিৎবাবু জানালেন, সব দিক বিচার করে ওই ছাত্রদের শাস্তি কমানো যায় কি না, তা বিবেচনা করে দেখা হবে।
উপাচার্যের যুক্তি, “প্রাণদণ্ডের মতো গুরুতর শাস্তি যদি পুনর্বিবেচনা করা যায়, তা হলে র‌্যাগিংয়ের শাস্তি পুনর্বিবেচনা করে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা কী?” বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-র নির্দেশ মেনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় যখন র্যাগিংয়ে কড়া শাস্তি দিচ্ছে, তখন অভিজিৎবাবুর এই মনোভাব ভুল বার্তা দিতে পারে বলে অনেকেরই আশঙ্কা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসের হস্টেল আবাসিক এক ছাত্রকে র‌্যাগিংয়ের জন্য দুই ছাত্রকে শাস্তি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হস্টেল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি এক জনকে দু’টি সেমেস্টার, আর এক জনকে এক সেমেস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এর প্রতিবাদে এবং শাস্তি লঘু করার দাবিতে সেপ্টেম্বর মাসে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে ৫০ ঘণ্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সংসদ ফেটসু। ছাত্রদের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে কড়া মনোভাব বজায় রাখায় কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন আচার্য-রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন।
কিন্তু পুজোর ঠিক এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠকে র‌্যাগিংয়ের শাস্তি কমানো নিয়ে তৎকালীন উপাচার্য শৌভিক ভট্টাচার্য ও সহ উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্তের সঙ্গে বিরোধ বাধে কাউন্সিল সদস্যদের অনেকের। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিজিৎবাবু। র‌্যাগিংয়ে সাজাপ্রাপ্তদের শাস্তি কমানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বৈঠকে তিন সদস্যের কমিটি গড়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ওই বৈঠকের পরেই শৌভিকবাবু আচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। শৌভিকবাবুর ইস্তফার পরে ছ’মাসের জন্য অভিজিৎবাবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে।
অবশ্য অভিজিৎবাবু বলেন, “আইনের মধ্যে থেকেই যা করার করা হবে। তবে ছাত্রছাত্রীরা সন্তানের মতো। তাদের কোনও ক্ষতি হোক, শিক্ষক হিসেবে সেটা কাঙ্ক্ষিত নয়।” তিনি জানান, এক সময়ে ছাত্র অসন্তোষে জেরবার শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে (বেসু) শান্তি ফিরেছে ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিকাঠামো এবং সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে। সেই পথেই যাদবপুরেও ছাত্র বিক্ষোভ কমাতে চান অভিজিৎবাবু।
যদিও বেসুতে এ পর্যন্ত যতগুলি র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে, তাতে কড়া পদক্ষেপই করেছেন কর্তৃপক্ষ। সোমবারও বেসুর উপাচার্য অজয় রায় বলেন, “অভিজিৎবাবু কী বলেছেন জানি না। কিন্তু বেসু-তে এক বার শাস্তি দেওয়ার পরে তা পুনর্বিবেচনা বা কমানোর প্রশ্নই ওঠে না।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসও বলেন, “ইউজিসি-র নির্দেশ মেনে র‌্যাগিংয়ে জড়িতদের যে শাস্তি প্রাপ্য, তা-ই দেওয়া হয়।”

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.