বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে এক দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে। জখম হন চার জন। শনিবার রাতে বৈষ্ণবনগর থানা থেকে এক কিলোমিটার দূরে পঞ্চুটোলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মোসারফ হোসেন (২৬)। জখমদের কাউকে পুলিশ খুঁজে পায়নি। স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, বোমা বিস্ফোরণে জখম ৪ জনকে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ দিকে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনায় কংগ্রেস ও তৃণমূলের চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, এলাকা দখল করতে তৃণমূল কংগ্রেস বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের এনে বোমা তৈরি করছিল। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, তাদের উত্থান রুখতেই এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে কংগ্রেস দুষ্কৃতীদের দিয়ে বোমা বানাচ্ছিল। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে। কয়েক জন জখম হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জখমদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে।”
বৈষ্ণবনগরের বীরনগর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস দখল করে। এর পর থেকেই তৃণমূল ও কংগ্রেসের গোলমাল শুরু। গত শনিবার রাতে পঞ্চুটোলা গ্রামের বাসিন্দা ৮০ বছরের সোনা বেওয়ার বাড়ির পিছনে একটি পরিত্যক্ত ঘরে ৭-৮ জন দুষ্কৃতী বোমা বানাচ্ছিল। রাত নটা নাগাদ বিকট শব্দে আশেপাশে এলাকা কেঁপে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, বোমা বিস্ফোরণের ওই ঘরের একটি ইঁটের দেওয়াল ধসে গিয়েছে। ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরটির মধ্যে চার-পাঁচজন রক্তাক্ত অবস্থা ছটফট করছিল। পুলিশ আসা আগেই জখমদের নিয়ে বাকিরা পালিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পর গভীর রাতে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে পুলিশ মোসারফ হোসেনর মৃতদেহ উদ্ধার করে। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “মালদহ জেলা জুড়ে কর্মী, সমর্থকেরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছে। কংগ্রেসের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। সেই আতঙ্কে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে কংগ্রেস বাইরে থেকে দুষ্কৃতীরা এনে বোমা বানাচ্ছিল। পুলিশ সুপারকে দোষীদের গ্রেফতার করতে বলেছি।” অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “তৃণমূল দল ভাঙা এবং এলাকা দখলের রাজনীতি করছে। পুলিশকে দিয়ে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে তৃণমূল যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেকে কংগ্রেস না ছাড়ায় ভয় দেখানোর জন্য বাইরের দুষ্কৃতীদের আনা হচ্ছে। তাই ওই কাজ করছিল।” |