নিগমের বেহাল দশা ঘোচাতে উদ্যোগী হতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিল উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ ড্রাইভার্স অ্যান্ড তৃণমূল শ্রমিক কমর্চারী ইউনিয়ন। গত সপ্তাহে সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এক আবেদনপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। সংগঠন সূত্রেই জানা গিয়েছে তালিকায় ফাইল বন্দি ছয় শতাধিক কর্মীর স্বেচ্ছাবসরের প্রকল্প চালু, বিকল্প আয় বাড়ানো, নতুন বাস, আর্থিক উপদেষ্টা নিয়োগের মত বিষয় রয়েছে।
সংগঠন কার্যকরী সভাপতি আবদুর রহমান বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সংস্থাকে ঘুরে দাঁড় করানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। আধিকারিকদের একাংশের গাফিলতি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সব মাথায় রেখেই আমরা সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব কার্যকর করার আবেদন জানিয়েছি।” মুখ্যমন্ত্রীকে সংগঠনের সদস্যরা জানিয়েছেন, অবসর নেওয়ার পর কর্মীদের প্রাপ্য টাকা দেওয়া হচ্ছে না। আদালতের নির্দেশে পরে বকেয়া মেটাতে বাড়তি সুদের বোঝা চাপছে। কর্মীদের বেতন খাতে বকেয়া বেড়ে ১৬ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। অনলাইনে কেন্দ্রী য়ভাবে অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থা দ্রুত চালু করা না হলে আর্থিক পরিকাঠামো সচল রাখার সমস্যা বাড়বে।
আর্থিক বোঝা কমাতে গত নভেম্বর মাসে স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি জারির পর প্রায় এক বছর হতে চললেও তা কার্যকর করা যায়নি। প্রকল্পের তালিকাভুক্ত ৬০৭ জনের কার্যকাল ৩০ সেপ্টেম্বর নির্দিষ্ট করা হলেও তা পিছিয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতির জেরে সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা সংস্থার কর্তারা ঘোষণা করলেও কবে তা চালু করা হবে সেটা স্পষ্ট নয়। সংস্থার স্বাভাবিক কাজকর্মে প্রভাব পড়ছে। আবার মাসে প্রায় ২ কোটি টাকার বেতনের বোঝা কমানো যাচ্ছে না। প্রকল্পটি কার্যকর করা হলে দুই শতাধিক পদে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের সুযোগ তৈরির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংস্থার খরচ বাড়লেও যাত্রী ভাড়া বাবদ আয় দিয়ে ওই মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে।
সংস্থার একাংশ অফিসার কর্মীরা জানান, বাসের গায়ে প্রচার, সংস্থার অব্যবহৃত জমিতে এটিএম কাউন্টার, পেট্রোল পাম্প, মোবাইল টাওয়ার, মার্কেট কমপ্লেক্স, কনফারেন্স হল তৈরির মত প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বিকল্প আয়ের সম্ভবনা নিয়ে কেবল ঘোষণা হয়েছে। কাজের কাজ হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, আর্থিক নয়ছয়ের আশঙ্কা এড়াতে আর্থিক উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়টি ঝুলে আছে। এমডি জয়দেব ঠাকুর বলেন, “স্বেচ্ছাবসরের ব্যাপারে বরাদ্দ চেয়ে নথিপত্র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। নিয়োগ-সহ সব বিষয় পরিকল্পনায়রয়েছে। সে সব বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।” |