চিকিৎসা গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমের নামে। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম স্বপ্না ঘোষ (৬০)। বাড়ি রবীন্দ্রনগরে। বাড়ির লোকদের অভিযোগ, শ্বাসকষ্ট নিয়ে বৃহস্পতিবার স্বপ্নাদেবীকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। রোগিণী সুস্থ আছেন বলে চিকিৎসক শুক্রবার জানিয়েও ছিলেন। আইসিইউ থেকে তাঁকে সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়। অথচ শনিবার তিনি মারা যান। পরিবারের লোকদের অভিযোগ, তাঁর চিকিৎসাই ঠিক মতো হয়নি। তাঁরা এ ব্যাপারে শীঘ্রই থানায় অভিযোগ জানাবেন।
স্বপ্না দেবী যাঁর অধীন ছিলেন সেই চিকিৎসক হরিরাম অগ্রবাল বলেন, “স্বপ্নাদেবী হৃদরোগে ভুগছেন। আগেও বহু জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছেন। তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল পরিবারের লোকদের তা জানানো হয়েছিল। তবে চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হচ্ছিলেন। পরিবারের লোকরা সাধারণ শয্যায় দেওয়ার জন্য বলছিল। কিছুটা সুস্থ হচ্ছিলেন বলে তাই সাধারণ ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। শনিবার আচমকা অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান।” এই ঘটনার পর ফের নার্সিংহোমগুলির একাংশর কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নার্সিংহোমগুলির কাজকর্মে নজরদারি করার দাবি উঠেছে। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক বলেন, “চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অসন্তোষ থাকলে সেই ব্যাপারে নিয়ম মাফিক অভিযোগ জানানো দরকার। তা হলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্বপ্নাদেবীর ছেলে সঞ্জয়বাবু এবং পরিবারের অন্যান্যদের অভিযোগ, “নার্সিংহোমে চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে।” তাঁরা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে রোগিণীকে আইসিইউ থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। তাতে পরিবারের লোকেরা ভেবেছেন স্বাপ্নাদেবী ভালই রয়েছেন। ওই দিন বেলা পৌনে ২ টা নাগাদ ফোনে বাড়ির লোকদের জানানো হয় রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁরা নার্সিংহোমে গিয়ে দেখেন স্বপ্না দেবীকে আইসিইউ-তে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। অথচ রোগিণী তখন বেঁচে রয়েছেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্বপ্নাদেবীর বোন আল্পনা মজুমদার। অসমে একটি রেল হাসপাতালের তিনি মেট্রন বলে জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, “দিদি তখন মরে গিয়েছে। অথচ ভেন্টিলেটরে রেখে পরিবারের লোকদের বোকা বানাতে চাইছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। প্রায় সাড়ে চারটে পর্যন্ত নাটক চলার পর স্বপ্নাদেবীকে মৃত ঘোষণা করা হয়।” তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মৃতার পরিবারের লোকেরা। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশও যায়। নার্সিংহোমের তরফে দাবি করা হয়েছে, কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁদের লিখিত জানাতেও বলা হয়েছিল। প্রয়োজনে ময়না তদন্তের জন্য তাঁরা বলেছিলেন। অথচ রোগীর আত্মীয়েরা তা চাননি। বাইরে থেকে পরিচিতেরা আসবেন বলে ওই দিন তাঁরা মৃতের দেহও নেননি। রবিবার বেলা ২টা নাগাদ তাঁরা মৃতদেহ নিয়ে যান।
|