ত্রিপুরার স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে সরব হল রাজ্য কংগ্রেস। স্বাস্থ্য অধিকর্তার সাম্প্রতিক একটি নির্দেশের প্রেক্ষিতেই আন্দোলনে নেমেছেন দলীয় নেতৃত্ব।
সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ‘নিম্নমানের’ ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে বলে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে তা ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলেন ত্রিপুরার স্বাস্থ্য অধিকর্তা সত্যরঞ্জন দেববর্মা।
ওই চিঠিরই প্রতিলিপি দেখিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের কয়েকজন কর্তার আঁতাতে হাসপাতালগুলিতে নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। দলীয় মুখপাত্র অশোক সিন্হা সাংবাদিকদের জানান, ‘‘রাজ্যবাসীর স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে দফতর উদাসীন। এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হোক সিবিআইকে। প্রয়োজনে এ নিয়ে আদালতেও যেতে প্রস্তুত।”
ত্রিপুরার স্বাস্থ্য দফতরের ‘টেন্ডার’-এর বরাত পেয়েছিল হিমাচল প্রদেশের একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। সেইমতো সংস্থাটি ওষুধ সরবরাহ করে। সে গুলির মধ্যে শিশুদের ওষুধ, নানা অ্যান্টিবায়োটিক ছিল। গুয়াহাটির পরীক্ষাগারে ওষুধের ১১টি নমুনায় দেখা যায়, তা একেবারেই নিম্নমানের। সে কথা স্বীকার করেছিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তিনি বলেন, ‘‘গুয়াহাটি পরীক্ষাগার থেকে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই সে গুলি ব্যবহার না-করার নির্দেশ দেওয়া হয়।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ৫ সেপ্টেম্বর সব সরকারি হাসপাতাল ও জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নির্দেশ পাঠান অধিকর্তা। কিন্তু ওই ওষুধগুলির পরিণতি কী হয়েছে তা জানতে পারেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’
দেড় মাসের বেশি সময় কেটে গিয়েছে, ওই রিপোর্ট মেলেনি কেন? এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি স্বাস্থ্য অধিকর্তা। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অশোক সিন্হার দাবি, ‘‘ওই সংস্থার ওষুধ তৈরির লাইসেন্স ২০০৯ সালে বাতিল হয়ে যায়। তা স্বত্ত্বেও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ অফিসারদের একাংশ ওই সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়েছেন।”
স্বাস্থ্য অধিকর্তার বক্তব্য, সরবরাহকারী সংস্থার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই সংস্থার নির্বাচন প্রক্রিয়া চলে। ওই সব নথি নকল কি না, তা পরীক্ষার ব্যবস্থা রাজ্যের নেই। স্বাস্থ্যসচিব এম নাগারাজুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেন। |