হাঁপিয়ে পড়াটাই কাল হল।
দুপুর থাকতেই ‘অপারেশন’ সারা হয়ে গিয়েছিল। দুগ্ধ সমবায় কেন্দ্র থেকে কয়েক লক্ষ টাকার সরঞ্জাম নিয়ে বেরিয়েও পড়া গিয়েছিল নিশ্চিন্তে। ভারি ভারি যন্ত্রপাতি কাঁধে বেশ খানিকটা চলেও আসা গিয়েছিল। এ বার সকলের মনে হল, মাঠে বসে একটু জিরিয়ে নিলে কেমন হয়। সেটাই সব হিসেব গোলমাল করে দিল। লোকজনের চোখে পড়ে যায় বস্তা-সহ দুষ্কৃতীরা। দু’জন পিঠটান দিতে পারলেও ধরা পড়ে যায় বাকিরা। তাদের মারধর করে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরের দিকে খেতে বেরিয়েছিলেন বেড়াচাঁপার ইছামতী দুগ্ধ সমবায় কেন্দ্রের জনা কয়েক কর্মী। সেই সুযোগে ঘরে ঢুকে দামী দামী গোটা চারেক যন্ত্র ব্যাগে ভরে হাপিশ করে দেয় চার চোর। বাথরুমে ঢুকে দরজা টেনে দেয় ভিতর থেকে। বেলা তখন প্রায় ৪টে। ঘরে ঢুকে লণ্ডভণ্ড দশা দেখে ঘটনা বুঝতে দেরি হয়নি কেন্দ্রের কর্মী প্রাণেশ রায়ের। তিনি হইচই শুরু করেন। চলে আসেন তাপস ঘোষ নামে আরও এক জন। |
বাথরুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে সন্দেহ হয়েছিল তাঁদের। দরজা ভেঙে দেখা যায়, তত ক্ষণে বাথরুমের জানলার কাচ ভেঙে পিঠটান দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
খোঁজ খোঁজ পড়ে যায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। তত ক্ষণে খভর ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশেও। লোকজন চোর ধরতে বেরিয়ে পড়ে। হঠাৎ এলাকার কারও কারও চোখে পড়ে, বেশ খানিকটা দূরে মাঠের মধ্যে চার যুবক ভারি বস্তা ধরে টানাটাননি করছে। দু’জন তত ক্ষণে হাল ছেড়ে বসে পড়েছে মাঠে। বাকি দু’জন কপালের ঘাম মুছতে মুছতেও বস্তা নিয়ে চেষ্টা করছে এগোনোর। সন্দেহ হওয়ায় লোকজন ঘিরে ফেলে তাদের। ফাঁকতালে পালিয়ে যায় মাঠে বসে থাকা দু’জন। ধরা পড়ে যায় ছোট্টু সর্দার এবং সুমন মোল্লা নামে বাকি দুই দুষ্কৃতী। ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে দু’জনকে শুরু হয় মার। পরে দেগঙ্গা থানার ওসি পলাশ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে হাড়োয়ার ধর্মতলার বাসিন্দা ওই দুই যুবককে। পলাতক দু’জনের পরিচয় তারা জানে না, এমনটাই দাবি করেছে ধৃতেরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ভারি ভারি মালপত্র সরিয়ে ফেললেও বেশি দূর টেনে নিয়ে যেতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। মাঠে বসে হাঁপাচ্ছিল। সেই সুযোগেই হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় তারা। |