কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই এবং বিজেপি ছেড়ে অনেকে যোগ দিলেন তৃণমূলে। রবিবার বসিরহাটে দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্যান্য দলের ওই নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দেন।
আইএনটিইউসি এবং কংগ্রেস ছেড়ে আসা মোহন বসু, খোকন গাজি, নারায়ণ সরকাররা বলেন, “বসিরহাটে কংগ্রেস পরিবারতন্ত্র চালাচ্ছে। ফলে দলে গতি হারিয়েছে। নিজেদের জয়ের থেকে সিপিএমকে জেতানোর জন্যই এখানে কংগ্রেসিরা বেশি তৎপর। স্বজনপোষণ চলছে। শ্রমিকের স্বার্থ দেখা হচ্ছে না। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নমুখী কাজে সামিল হতে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য হলাম।” অন্য দিকে, জ্যোতিপ্রিয়বাবুর বক্তব্য, “আমরা কারও দল ভাঙাতে আসিনি। কিন্তু কেউ যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কাজে সামিল হতে চান, তাঁকে স্বাগত। বসিরহাটের বহু কংগ্রেস ও সিপিএম নেতা-কর্মী সে জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।” এ দিন কংগ্রেস ও বামদল মিলিয়ে হাজার দু’য়েক নেতা-কর্মী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। সিপিএমের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। |
এ দিন বিজয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের লক্ষেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল বসিরহাটের রবীন্দ্রভবনে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু ছাড়াও হাজির ছিলেন স্থানীয় সাংসদ নুরুল ইসলাম-সহ বহু বিধায়ক, নেতা। জ্যোতিপ্রিয়বাবুর অভিযোগ, লোকসভা ভোটের আগে জেলায় অস্ত্রভাণ্ডার গড়ে তুলছে সিপিএম। তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে আনা সিপিএমের অস্ত্রভাণ্ডারের সন্ধানে শাসন, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ, হাড়োয়ায় সিআইডি এবং পুলিশ যৌথ তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। জ্যোতিপ্রিয়বাবুর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত আড়াই বছরে বামেদের হামলায় ১১ জন তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। এই প্রসঙ্গেই দলের কর্মীদের তাঁর পরামর্শ, “সজাগ থাকুন। সাবধান থাকুন। কোথাও হাঙ্গামা বাধাতে চাইলে সকলে মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে তা আটকান।”
সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেবকে কটাক্ষ করে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “চোরের মায়ের আবার বড় গলা। দুর্নীতি পাহাড়ে বসা সিপিএম নেতারা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘেরাও করবেন।” এর পরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, “মনে রাখবেন আমরা তার চব্বিশ ঘণ্টা আগে বারাসতের পার্টি অফিস (সিপিএম) ঘেরাও করব।” বসিরহাটে ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল রাখার মতো দু’টি গোডাউন তৈরি হবে বলেও এ দিন জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। |