দিনকয়েকের নিম্নচাপ শক্তি হারাতেই রবিবার সকালে পুব আকাশে সূর্যদেবের উদয়। রৌদ্যকরোজ্জ্বল ঝকঝকে আবহাওয়ায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্যোক্তারা কালীপুজোর আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। লাগাতার বৃষ্টিতে মণ্ডপ তৈরি স্থগিত ছিল দিন কয়েক। এ দিন শ্রমিকরা নব উদ্যমে শুরু করেছে মণ্ডপের কাজ। নদিয়া জেলা ডেকরেটার্স সমন্বয় সমিতির সহ সম্পাদক হরিপদ সাহা বলেন, “রানাঘাট শহরে কমপক্ষে ৩০টি ক্লাবের কালীপুজো হয়। এ ছাড়াও বাড়ির পুজো তো রয়েইছে। বৃষ্টিতে কয়েকদিন কাজ বন্ধ ছিল। এখন শ্রমিক ঠিক সময়ে মণ্ডপ তৈরি করার জন্য শ্রমিকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।”
রানাঘাটের মহাপ্রভুপাড়ায় শ্যামলী ক্লাবের পুজো বরারর দর্শক টানে। ফি বছর বড় বাজেটের বৈচিত্রপূর্ণ মণ্ডপসজ্জা তৈরি করে উদ্যোক্তারা। এ বছর পঞ্চাশ ফুট চওড়া ও চল্লিশ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট প্লাইউড, বাঁশ, কাঠ, প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়ে বানানো হচ্ছে মণ্ডপ। কাঠের সিঁড়ি ভেঙে বিহারের রাজগীরের বৌদ্ধ মন্দিরের অনুকরনে গড়া মণ্ডপের দোতলায় উঠে প্রতিমা দর্শন করতে হবে দর্শনার্থীদের। লাগাতার বৃষ্টিতে কয়েকদিন কাজ বন্ধ থাকায় এখন মণ্ডপ তৈরিতে চূড়ান্ত ব্যস্ততা ডেকরেটার্স কর্মীদের। শ্রমিক সঞ্জু সিকদার বলেন, “ভেবেছিলাম ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারব। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে দিন কয়েক কাজ বন্ধ রাখতে হয়। এখন দিন রাত এক করে কাজ করতে হবে। কিন্তু আবার বৃষ্টি নামলে ঠিক সময়ে মণ্ডপ বানাতে পারব না।” ক্লাব সভাপতি অশোক বসুর উদ্বেগ, “বৃষ্টিতে এখনও অবধি মণ্ডপের কাজই শুরু করতে পারলাম। জানি না কী হবে?”
বৃষ্টির জন্য রানাঘাট হার্ভ ইনস্টিটিউটে ইয়ং রিক্রিয়েশন ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তাদের কপালেও দুশ্চিন্তার চওড়া ভাঁজ। এই পুজোও প্রতিবছর বেশ দর্শক টানে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে রাজস্থানের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরির কাজ এখনও সেভাবে এগোয়নি। ক্লাব সদস্য উদয়ন শর্মা বলেন, “অসময়ের বৃষ্টি কাজে অনেকটাই ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। এখন সারা দিন কাজ করে শ্রমিকরা মণ্ডপ তৈরিতে ব্যস্ত। পুজোর আগে আর বৃষ্টি না নামলে আশা করি যথা সময়ে কাজ শেষ হবে।” এ ছাড়াও শহরের দিশারী ক্লাবের পুজো এ বার সুবর্ণজয়ন্তীতে পা দিল। স্থানীয় মানগোবিন্দ স্কুল মাঠে রঙিন চট দিয়ে দক্ষিণ ভারতের একটি মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। বৃষ্টি বাদলার দরুণ কাজে ব্যাঘাত ঘটায় ঠিক সময়ে মণ্ডপ তৈরি করা নিয়ে ক্লাব কর্তারা সংশয়ী। শ্রীনগরের জাতীয় সংঘ, কামারপাড়া তেরঙ্গী ক্লাব, গোপালনগর রোডের আদর্শ সংঘ, মদনমোহন পল্লির বিবেকানন্দ পল্লীর বিবেকানন্দ ক্লাবের কর্তাদের ল্যাজেগোরবে অবস্থা। সকলেরই একই চিন্তা, অকাল বৃষ্টিতে দিন তিনেক কাজ বন্ধ থাকার জন্য ঠিক সময়ে দর্শকদের জন্য মণ্ডপের দরজা খুলে দেওয়া যাবে তো! |