|
|
|
|
আশঙ্কা কৃষি দফতরের |
বৃষ্টিতে পিছোতে পারে আলু চাষ
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সম্প্রতি দুর্যোগে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে সব্জি ও ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জেলায়। টানা বৃষ্টি চলায় ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা। তারই সঙ্গে আরও একটি সংশয় দেখা দিয়েছে কৃষি দফতরের কর্তাদের। একটানা বৃষ্টি চলতে থাকলে আলু চাষও পিছিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা। সেক্ষেত্রে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা আদৌ পূরণ হবে কিনা, ফলন ভাল হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় তৈরি হচ্ছে। কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর নিমাই রায় বলেন, “বৃষ্টি চলতে থাকলে পাকা ধানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আলু চাষও পিছিয়ে পড়তে পারে।” কৃষি দফতরের তথ্য আধিকারিক দুলাল দাস অধিকারীর কথায়, “এই সময়েই জলদি আলুর চাষ শুরু হয়ে যায়। এবার এখনও এক ছটাকও জলদি আলুর চাষ হয়নি!”
বর্তমানে এমনিতেই সব্জি বাজারে চড়া দাম। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলুর দামও। কিছুদিন আগেও যে আলুর দাম ছিল কেজি প্রতি ৮-১০ টাকা। তা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। মেদিনীপুরের বাজারেও আলু দাম ১৫-১৬ টাকা কেজি হয়ে গিয়েছে। তার উপরে জলদি আলুর চাষ না হওয়ায় দাম আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১২ হাজার হেক্টরের মতো জলদি আলুর চাষ হয়। যে চাষ শুরু হয়ে যায় অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখ থেকেই। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চাষ চলে। যে আলু ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকেই তোলা শুরু হয়ে যায়। বাজারে এসে যায় নতুন আলু। এবার আদৌ জলদি আলুর চাষই করা যাবে না বলে কৃষি দফতরের অনুমান। যদিও হাতে এখনও ৫-৬ দিন সময় রয়েছে। কিন্তু এখনও জেলা জুড়েই চলছে বৃষ্টি। আকাশের যা গতিবিধি তাতে দু’একদিনের মধ্যে বৃষ্টি থামবে বলে মনে হচ্ছে না কৃষি দফতরের আধিকারিকদের। ফলে মাঠে জল জমে গিয়েছে। আর জল না শুকোলে আলু চাষ করা সম্ভব নয়।
তার সঙ্গে আরও একটি সংশয়। জলদি আলুর চাষ না হয়, না হল। সাধারণভাবে জেলায় যে আলুর চাষ হয় তা ধাক্কা খাবে না তো? যে ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে জমিতে জল দাঁড়িয়ে থাকবে। সে জল শুকিয়ে মাটি শুকনো হতে অনেক সময় লেগে যাবে। সাধারণত, নভেম্বর থেকেই চাষিরা আলু লাগাতে শুরু করেন। কিন্তু বৃষ্টি যদি টানা আরও এক সপ্তাহ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে চাষ পিছিয়ে যাবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গড় আলু চাষের পরিমাণ ৭৫ হাজার হেক্টর। গত বছর চাষ হয়েছিল ৭৫ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছিল ২৪.৪৮ টন। চাষ পিছিয়ে গেলে ঘন উৎপাদন কমারও আশঙ্কা থেকে যায়। উৎপাদন কমলে ফের আলুর দাম বাড়বে। যদিও কৃষি দফতর জানিয়েছে, বর্তমানে জেলার ৭৬টি হিমঘরে ৩৩৫১ টন আলু রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় খাবার জন্য মাসে গড় আলু লাগে ১৯.৭৪ টন। নতুন আলু উঠতে উঠতে জানুয়ারি মাস হয়ে গেলেও জেলাকে আলুর জন্যে সমস্যায় পড়তে হবে না। অন্য রাজ্যে আলু পাঠালেও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। |
|
|
 |
|
|