আই লিগের এত বছরের ইতিহাসে যা কখনও ঘটেনি, তা গোয়ায় অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে এসেই করে ফেলল আবদুল আজিজের দল। স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়াকে প্রথমবার তাদের ঘরের মাঠে হারাল মহমেডান।
শুধু গোয়া কেন, নিজেদের ঘরের মাঠেও কোনও দিন স্পোর্টিংকে হারাতে পারেনি সাদা-কালো ব্রিগেড। মোট আটটা ম্যাচের মধ্যে চারটে হার, চারটে ড্র। সেখানে আজিজের কোচিংয়ে প্রথম বার স্পোর্টিং-বধ করার পরে গোয়া থেকে ফোনে পেন ওরজি বলছিলেন, “এক ধাক্কায় টিমের মনোবল অনেকটা বেড়ে গেল। স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে যে ফুটবলটা আমরা খেললাম, সেটা যদি পরের ম্যাচগুলোতে খেলতে পারি তা হলে আমাদের কেউ আটকাতে পারবে না।”
যুবভারতীতে ইউনাইটেড স্পোর্টসের বিরুদ্ধে পেনকে পুরো ছন্দে পাওয়া না গেলেও, রবিবারের ম্যাচে ফের স্বমহিমায় নাইজিরিয়ান মিডিও। সেই লম্বা লম্বা স্ট্রাইডে ‘ডাউন দ্য মিডল’ দৌড় এবং নিঁখুত পাসিং দক্ষতা। স্পোর্টিং ম্যাচে নিজে গোল না পেলেও, পাঁচ-ছ’টা দারুণ গোলের সুযোগ তৈরি করলেন। জোসিমারের প্রথম গোলেও পেনের অবদান অনিস্বীকার্য। পেনের দুরন্ত পারফরম্যান্সের জন্যই জোড়া গোল করে ম্যাচের সেরা হতে পারলেন না জোসিমার। মহমেডানের টানা দু’ম্যাচে পেন-ই সেই পুরস্কার জিতলেন। |
ম্যাচের সেরা না হলেও, আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার সূচিতে এক নম্বরে উঠে এলেন জোসিমার (৫)। এ দিন তাঁর প্রথম গোলটি পেনের সৌজন্যে হলেও, দ্বিতীয় গোলটি করলেন একক দক্ষতায়। আজিজ বলছিলেন, “জোসিমার একজন প্রকৃত স্ট্রাইকার। গোল হওয়ার সামান্য সুযোগ থাকলেও, গোল করে দেবে।” জোসিমারের ফর্ম স্বস্তিতে রাখলেও, টোলগের ব্যর্থতায় চিন্তায় মহমেডান।
জোসিমারের গোলে ১-০ এগিয়ে গেলেও, বিরতির পরেই বৈমা-র গোলে ১-১ করে ফেলে স্পোর্টিং। আর তখনই এক সঙ্গে তিনটে পরিবর্তন করে ম্যাচের রং বদলে দেন আজিজ। টোলগে-জেরি-পাইতেকে বসিয়ে অজয়, ইজরাইল ও মণীশকে নামান তিনি। মহমেডান কোচের মাস্টারস্ট্রোক। নিটফল, মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই ইজরাইলের পাস থেকে অজয়ের গোলে ২-১। আজিজ বলছিলেন, “সালগাওকর ম্যাচে দলের তিনটে প্রধান ফুটবলার ছিল না। চোটের জন্য পেন, লুসিয়ানো এবং জেরি খেলতে পারেনি। ওরা এসে যাওয়ায় এই ম্যাচে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমরা।”
মহমেডান বড় ব্যবধানে জিতলেও, স্পোর্টিং কিন্তু সহজে ম্যাচ ছাড়েনি। প্রথম থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলেন বৈমারা। ম্যাচের শুরুতে ‘অফসাইড ট্র্যাপে’ তাঁদের একটি গোলও বাতিল হয়। এবং ১-১ হওয়ার পর তো আরও চাপ বেড়ে যায় মহমেডান রক্ষণে। সে সময় আজিজ মাস্টারস্ট্রোক (ফুটবলার পরিবর্তন) না খেললে আরও বেকায়দায় পড়ে যায় মহমেডান! আজিজ বলছিলেন, “ওই সময় মাঝমাঠে পেনের ওপর চাপ পড়ে যাচ্ছিল। রক্ষণে নেমে খেলবে না অ্যাটাকে উঠবে, বুঝতে পারছিল না। মণীশ-ইজরাইলকে নামিয়ে পেনকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার করে দিয়েছিলাম।”
প্রথম বার স্পোর্টিংকে হারানোর আনন্দে মহমেডানের দুশ্চিন্তা শুধু জেরির হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট। পরের লাজং ম্যাচে তাঁর খেলা প্রায় অনিশ্চিত। |