ইউনাইটেড স্পোর্টস-এ অনেক কিছু নেইয়ের তালিকায় এ বার যুক্ত হয়েছে ‘জয়ের দেখা নেই’।
টানা পাঁচ ম্যাচে জয় অধরা ইউনাইটেডের। রবিবার সালগাওকরের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠেও তিন পয়েন্ট হাতছাড়া করলেন র্যান্টিরা। যা দেখে ক্ষোভে ফুটছেন এলকো সাতোরি। ডেরেক পেরেরার দলের বিরুদ্ধে হারের পর এ দিন সরাসরি দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার র্যান্টির দিকে আঙ্গুল তুললেন ডাচ কোচ। নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের দায়বদ্ধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি। ক্ষুব্ধ এলকো বলে দিলেন, “যে টাকা ক্লাবের থেকে র্যান্টি নিচ্ছে, সেই অনুযায়ী তো পারফরম্যান্স করা উচিত।”
এ কথা ঠিক যে, চিকা ওয়ালি, ফ্রান্সিস ফার্নান্ডেজদের বিরুদ্ধে এ দিন চূড়ান্ত ব্যর্থ র্যান্টি। বিশেষত বল ধরতে গিয়ে যে ভাবে বক্সের মধ্যে বার বার আছড়ে পড়তে দেখা গেল র্যান্টিকে, তাতে তাঁর ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। র্যান্টির যুক্তি, “আমি বলের সাপ্লাই পাচ্ছি না। গোল করব কী ভাবে? কার্লোস, জেমস, তুলুঙ্গাদের খুব মিস করছি।” র্যান্টির মতো এলকোও বললেন, “এ বার তুলুঙ্গা-জেমসের মতো ফুটবলার নেই। মাঝমাঠ তাই ঘেটে যাচ্ছে।” |
বিধ্বস্ত র্যান্টি। রবিবার কল্যাণীতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
|
এ দিন আসলে ডেরেকের স্ট্র্যাটেজির কাছেই মুখ থুবড়ে পড়েছে এলকোর যাবতীয় ‘গেম প্ল্যান’। শুরু থেকেই একেবারে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলেছে সালগাওকর। বিশেষত ম্যাচের শুরুতেই অগসটেনের গোলে গোয়ার দলটি এগিয়ে যাওয়ার পরই বুটের জঙ্গল তৈরি করে ইউনাইটেডের গোলের মুখ কার্যত বন্ধ করে দেন ডেরেকের ছেলেরা। আর সেই জঙ্গলেই এ দিন হারিয়ে গেলেন র্যান্টি, এরিক, বিনীতরা। ম্যাচের পর ডেরেক স্বীকারও করে নেন, “আমার দলের দূর্বলতাগুলো জানি। সে জন্যই অ্যাওয়ে ম্যাচগুলোতে ডিফেন্সিভ খেলার স্ট্র্যাটেজি নিয়েছি। তা ছাড়া কলকাতা থেকে কল্যাণী প্রায় তিন ঘণ্টার সফর করে এসে ভিজে মাঠে খেলাটা বেশ কঠিন। তাই ছেলেদের নির্দেশ দিয়েছিলাম ইউনাইটেডের গোলের মুখ বন্ধ করে দিতে। আর কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়ে আমার ছেলেরা গোল করতে সফল হয়েছে।”
কার্ড সমস্যার কারণে এ দিন বেলোকে পাওয়া যায়নি। ম্যাচের প্রতি মুহূর্তে বেলোর অভাব বেশ ভালই টের পেয়েছেন এলকো। দু’টি গোলই হয়েছে মূলত রক্ষণের ভুলে। এলকোও তাই বললেন, “বেলোর অভাব তো ছিলই। তা ছাড়া কখনও অফিস ফুটবল বা কখনও অন্য সমস্যার কারণে সবাইকে অনুশীলনে ঠিক করে পাচ্ছি না। যে জন্য আমার পছন্দ মতো দল করতে পারছি না। দীপক যেমন স্টপারে খেলতে অভ্যস্ত নয়। তবু ওকে আজ স্টপারে খেলিয়েছি। এ ভাবে তো আর দলের বোঝাপড়া তৈরি হয় না। যা ফল হওয়ার হচ্ছে।” দলের পারফরম্যান্সে এ দিন এলকো এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে ম্যাচের পর জল্পনা শুরু হয়ে যায়, তিনি পদত্যাগ করতে চলেছেন। দলের দুই প্রধান কর্তা নবাব ভট্টাচার্য ও অলোকেশ কুণ্ডু কোচের সঙ্গে তাই তড়িঘড়ি আলোচনাতেও বসেন। কোচকে শান্ত করা জন্য।
সব মিলিয়েই রবিবার চূড়ান্ত ফ্লপ র্যান্টিরা। শুধুমাত্র বিরতির দশ মিনিট আগে প্রায় ত্রিশ গজ দূর থেকে এরিকের দুরন্ত শট গোলার মতো সালগাওকারের জাল ভেদ করেছিল। কিন্তু রেফারি অফ সাইড দেন। যা নিয়ে অবশ্য ক্ষোভ রয়েছে ইউনাইটেডের। ম্যাচের পর মাঠের ভেতর রেফারিকে ঘিরে তর্কাতর্কিও জুড়ে দেয় ইউনাইটেড ফুটবলাররা। তখন মাত্র কয়েক হাত দূরত্বে অগসটেন, মিলাগ্রেসকে ঘিরে জয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠতে দেখা যায় সালগাওকর শিবিরকে। |