গঙ্গারামপুরে পুজো মণ্ডপে তরুণীকে যৌন নির্যাতন করে খুনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠল।
অষ্টমীর রাতে ঢাকের আওয়াজের আড়ালে মণ্ডপের মধ্যেই মধ্য-কুড়ির ওই মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীকে যৌন নির্যাতন চালিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তরুণীর জেঠু স্থানীয় থানায় সরাসরি গণধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল এই যে, অভিযোগ পাওয়ার পরেও পুলিশ প্রাথমিকভাবে ওই তরুণীর উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের প্রসঙ্গটিই এড়িয়ে গিয়েছে।
কেন? তদন্তকারী অফিসার থেকে জেলা পুলিশ সুপার কারও কাছেই এর কোনও সদুত্তর মেলেনি।
সুপ্রিম কোর্ট একাধিক রায়ে বার বার জানিয়েছে, নিগৃহীতার শরীরে ধর্ষণের প্রত্যক্ষ প্রমাণ না থাকলেও তাঁর পরিজনেরা যদি সেই অভিযোগ জানান, তা হলে পুলিশকে সেই ধারাতেই মামলা রুজু করতে হবে। সে ক্ষেত্রে মেডিক্যাল রিপোর্টের অপেক্ষা করা বাধ্যতামূলক নয়। তবে এ ক্ষেত্রে জেলা পুলিশের সাফাই, তদন্ত শেষ হয়নি। যৌন নির্যাতনের ধারা পরেও যুক্ত হতে পারে।
জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মূল অভিযুক্ত দু’জনকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। পরবর্তীতে যৌন নির্যাতনের ধারা যুক্ত হবে না এমন কোনও মানে নেই।”
শনিবার ওই তরুণীর জেঠু বলেন, “ঘটনার পরেই গঙ্গারামপুর থানায় ভাইঝিকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ দায়ের করেছি। অথচ পুলিশ এখনও যৌন নির্যাতনের ধারায় কোনও মামলা দায়ের করেনি।” যদিও ওই তরুণীর শরীরে কামড়, আঁচড়-সহ শারীরিক নির্যাতনের একাধিক চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কেবল খুনের মামলা দায়ের করায় ক্ষুব্ধ পরিজনেরা।
অভিযোগ, প্রথম থেকেই এই মামলায় যৌন নির্যাতনের অভিযোগটি পুলিশ এড়িয়ে গিয়েছে। মণ্ডপ থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধারের পরে অভিযুক্ত সন্দেহে নবমীর দিন ঢাকি এবং নৈশপ্রহরীকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও তাদের বিরুদ্ধে শুধু খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দুই যুবককে ধরা হয়। যদিও ঘটনার পর ১৪দিন কেটে গেলেও এখনও যৌন নির্যাতনের মামলা রুজু করেনি পুলিশ। জেলা পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ অফিসারদের কাছেও অভিযোগ গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শনিবার রাজ্য পুলিশের আইজি শশীকান্ত পূজারীও বলেন, “ঘটনাটির উপরে আমরা নজর রাখছি।”
|