নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্তের জোড়া
হানায় দুর্যোগের ভ্রূকুটি
ন্যার রেশ কাটার আগেই ফের দুঃসংবাদ!
পুজোর সময় ঘূর্ণিঝড় পিলিনের প্রভাবে অতিবৃষ্টি হয়েছিল ঝাড়খণ্ড ও দক্ষিণবঙ্গের একাংশে। তার ফলে উপচে গিয়েছিল একাধিক জলাধার ও নদী। প্লাবিত হয়েছিল ঝাড়খণ্ড ও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা। সেই বন্যা পরিস্থিতি সামলে ওঠার আগেই বৃহস্পতিবার আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ফের ভারী বৃষ্টি হতে চলেছে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায়। বৃষ্টি হতে পারে ঝাড়খণ্ডেও। এই ভারী বৃষ্টির ফলে ফের প্লাবন হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন রাজ্যের সেচকর্তারা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন জানান, দিন কয়েক আগেই অন্ধ্রে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছিল। তা এখনও বজায় রয়েছে। ওই নিম্নচাপ থেকে একটি অক্ষরেখা দক্ষিণবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর সঙ্গেই বাংলাদেশ ও সন্নিহিত এলাকায় নতুন করে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এই দু’য়ের দাপটেই আগামিকাল, শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, “বীরভূম, বর্ধমান-সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে সতর্কতাও জারি করা হয়েছে।”
ঘটনাচক্রে, এ বার বিদায়লগ্ন থেকেই অতি-সক্রিয় হয়ে উঠেছিল বর্ষা। সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত-নিম্নচাপের জেরে জোরালো বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। পুজোর সময় পিলিনের আবির্ভাবে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের শেষে বর্ষা বিদায় নিলেও বৃষ্টি পিছু ছাড়েনি দক্ষিণবঙ্গের।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বিদায়বেলায় বর্ষার অতি-সক্রিয়তার জেরেই বিপদে পড়েছিল ঝাড়খণ্ড-বাংলা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানী বলছেন, এ বার বর্ষার মরসুমে ঝাড়খণ্ডে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে সেখানে বৃষ্টি শুরু হয়। অক্টোবরের প্রথম পনেরো দিনে ঝাড়খণ্ডে স্বাভাবিকের তুলনায় তিন গুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। অক্টোবরে অতিবৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলি-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেও। এক আবহবিজ্ঞানীরা বক্তব্য, “অল্প সময়ে অতিবৃষ্টির জেরেই জলাধার উপচে গিয়েছিল। জলাধার বাঁচাতে জল ছাড়লে প্লাবিত হয়ে পড়ে দক্ষিণবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের একাংশ।”
রাজ্য সেচ দফতর সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক বন্যার জেরে পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলিতে এখনও জলস্তর উপরের দিকেই রয়েছে। জলাধারগুলিরও জলধারণ ক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া জেলাগুলিতে ফের ভারী বৃষ্টি হলে কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন তাঁরা।
এমনিতেই এ রাজ্যের পাশাপাশি মুম্বই ও পূর্ব উপকূল এলাকায় গত কয়েক দিনের প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টিতে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন আবার ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীসগঢ় ভারী বর্ষণের মুখে। ওভারহেড তারে গাছ পড়ে ছিঁড়ে যাওয়া এবং লাইনে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় হাওড়া থেকে চেন্নাই, মুম্বইমুখী ট্রেন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পূর্ব উপকূল রেলের বিভিন্ন অংশেও ট্রেন আটকে গিয়েছে। হাওড়া থেকে বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেনকে ঘুর পথে পাঠানো হচ্ছে। ঝড় বৃষ্টির দাপটে বৃহস্পতিবারও রায়গড়ে ওভারহেড তারে গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে যাওয়ায় হাওড়া-মুম্বই দুরন্ত এক্সপ্রেস ৯ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে থাকে। বিভিন্ন স্টেশনে আরও বেশ কয়েকটি ট্রেন দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকে বৃষ্টির জন্য।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার ফলকনামা এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে পরিবর্তিত সময়ে অর্থাৎ বিকাল তিনটের সময় ছাড়া হবে। বৃহস্পতিবার বাতিল হয়েছে দিঘা-বিশাখাপত্তনম এক্সপ্রেস। এ ছাড়া, পুরী-চেন্নাই, পুরী-আমদাবাদ এক্সপ্রেস সহ বেশ কয়েকটি ট্রেনকে ঘুরপথে চালানো হবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.