ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাওয়ার পরে বাম আমলের মূল্যায়ন পদ্ধতিই বদলে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এত দিন স্ব-মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু ছিল পঞ্চায়েতে। এ বার থেকে নির্বাচিত পঞ্চায়েতের কাজের মূল্যায়ন করবেন রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের আমলারা। প্রত্যাশিত ভাবেই নতুন এই ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। অন্য দিকে, বাম আমলের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্তে মর্যাদা হারাবে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা।”
কাজের হিসাব বুঝে নিতে ২০০৫ সালে পঞ্চায়েতে মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু হয়। দফতরের এক কর্তা জানান, সাধারণ নিয়মে পঞ্চায়েতের আর্থিক হিসাবের ওপরে নজরদারি করে অডিট। কিন্তু পঞ্চায়েত কেমন কাজ করছে, কোন পঞ্চায়েতের কাজের গতি কেমন, কাজ করতে গিয়ে কোন পঞ্চায়েতের কী ধরনের অসুবিধা হচ্ছে মূলত সে সব দেখতেই মূল্যায়ন চালু করেছিল বাম সরকার। ত্রিস্তরে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদগুলি নিজেরাই নিজেদের কাজের মূল্যায়ন করত। সেই ভিত্তিতে নম্বরও দিত তারা।
সূর্যবাবুর কথায়, “অনেক ভাবনাচিন্তার পরেই ওই পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম, কাজ করতে গিয়ে কোথায় কী অসুবিধা হচ্ছে, পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সেটা বলুন। কোথায়-কতটা-কী চাই, সেটাও তাঁরাই সব চেয়ে ভাল বলতে পারবেন। কোনও অফিসারের পক্ষে বাইরে থেকে দেখে কাজের মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়।” আট বছর আগের সেই মূল্যায়ন পদ্ধতি বদলে দিয়ে এখন আমলারাই সেই কাজ করবেন। ঠিক হয়েছে, এখন পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই একটি করে প্রশ্নমালা দেওয়া হবে। তাতে শুধু প্রশ্নের উত্তরই দেওয়া যাবে। সেই উত্তর পরীক্ষা করে নম্বর দেবেন গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে ব্লকের বিডিও-র নেতৃত্বে কমিটি, পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে মহকুমা শাসকের কমিটি এবং জেলাপরিষদের ক্ষেত্রে রাজ্যের পঞ্চায়েত কমিশনার ও পঞ্চায়েত দফতরের কয়েক জন অফিসারকে নিয়ে তৈরি কমিটি।
কেন এই পরিবর্তন, তার ব্যাখ্যা দিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, “বাম আমলে মূল্যায়নটা হত পরীক্ষার হোম সেন্টারের মতো। যে যা পেরেছে, লিখে দিয়েছে। কাজ না-করেও কাজ করার দাবি করেছে।” তাঁর দফতরের অবশ্য বক্তব্য, স্ব-মূল্যায়ন শুরু হয়েছিল অনেকটাই আদর্শগত জায়গা থেকে। প্রয়োগের পর পদ্ধতির কোথায় খামতি রয়েছে, সেটা বুঝতেই এতগুলো বছর কেটে গিয়েছে। তার ফলে এমনও হয়েছে যে সব পঞ্চায়েত মোটেই কাজ করেনি, তারাও স্ব-মূল্যায়নের সুযোগ নিয়ে ভুয়ো দাবি করেছে। ওই সব দাবি পরীক্ষার সে রকম নিশ্ছিদ্র কোনও ব্যবস্থা ছিল না। সূর্যবাবুর অবশ্য দাবি, “পঞ্চায়েত স্ব-মূল্যায়ন করার পরে রাজ্য স্তরেও তা পরীক্ষা করে দেখা হত। আগের পদ্ধতিতে নির্বাচিত পঞ্চায়েতকে মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি ছিল, যা আমলাতন্ত্র করতে পারে না।”
স্ব-মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করেই এত দিন পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য সরকার। প্রত্যেক ব্লকে দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ৫০ হাজার টাকা করে, প্রতি জেলায় ২টি পঞ্চায়েত সমিতিকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা করে এবং ২টি জেলাপরিষদকে ৩৫ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হত। টাকার টানাটানিতে গত বছরে অবশ্য এই পুরস্কার সরকার দিয়ে উঠতে পারেনি। নতুন মূল্যায়নের ভিত্তিতে রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রও এ বার থেকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছে। |
স্কুল সার্ভিসে দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং শুরু হবে ২৮ অক্টোবর। এই দফায় ৮,৪৩৬ জন প্রার্থীকে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হবে বলে কমিশন জানিয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বৃহস্পতিবার বলেন, “যে প্রার্থীরা কাউন্সেলিংয়ে ডাক পাচ্ছেন, তাঁদের কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। শুক্রবার বেলা ১২টার পর থেকে কমিশনের ওয়েবসাইট থেকেও বিষয়টি জানতে পারবেন তাঁরা। এ ছাড়া, WBSSC-র পরে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে ৫৪২৪২ নম্বরে পাঠালেও প্রার্থীরা কাউন্সেলিং সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাবেন।” প্রথম দফায় ২১ হাজার ৯৪২টি পদের জন্য শিক্ষক বাছাই হয়েছে। |