রেশন কার্ডের জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্লক অফিসে যাতায়াত করছিলেন বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু নানা কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। এই অভিযোগে বিভিন্ন গ্রামের ওই বাসিন্দারা একজোট হয়ে বৃহস্পতিবার মানবাজার ১ ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আসে। শেষ পর্যন্ত দুপুরে বিডিও-র আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে।
প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ব্লক অফিস চত্বরে থাকা খাদ্য দফতরের অফিসে রেশন কার্ড সংক্রান্ত কাজ করা হয়। নতুন কার্ড, স্থানান্তর, নষ্ট হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া কার্ড নতুন করে তৈরি করা নিয়ে বাসিন্দাদের আবেদন ওই দিন গ্রহণ করা হয়। তাঁদের দাবি, ওই দফতরে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, এ দিন ৫০টি কার্ড দেওয়া হবে। অথচ সেখানে এ দিন কার্ড নিতে হাজির হয়েছিলেন প্রায় ৩০০ জন। দফতরের কর্মীদের কাছে ওই খবর পেতেই বাইরে অপেক্ষমান বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এ দিন সবাইকে কার্ড দিতে হবে বলে তাঁরা দাবি করেন।
গোপালনগর পঞ্চায়েতের জবলা গ্রামের বাসিন্দা সাগর মাহাতোর অভিযোগ, “প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ব্লক খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের আসছি। কখনও বলা হয় কাগজপত্র ঠিক নেই, কখনও বলা হয় সে দিন খাদ্য পরিদর্শক নেই। ১৮ কিলোমিটার দূর থেকে একটা রেশন কার্ডের জন্য যাতায়াত করতে গিয়ে সারাদিন চলে যাচ্ছে।” |
ধানাড়া পঞ্চায়েতের উদয়পুর গ্রামের সমরেশ বাউরি বলেন, “রেশন কার্ড না থাকলে অনেক কাজ আটকে যায়। তাই বুধবার রাত থেকে লাইন দিয়েছি। আমার আগে অনেকে এসেছিলেন। রেশনকার্ড না পেলে এখান থেকে নড়ব না।’ ভালুবাসা অঞ্চলের চেপুয়া গ্রামের পল্টু মাহাতোর অভিযোগ, তিনি গত দু’মাস ধরে রেশন কার্ডের জন্য ঘুরছেন। তাঁকে নানা কারণ দেখিয়ে পরে আসতে বলা হয়। বিক্ষোভের জেরে ব্লকের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য ও সরবরাহ পরিদর্শক নরেন হাঁসদা এবং কর্মীরা ব্লক অফিসের দোতলায় উঠে যান। পরে নরেনবাবু জানান, তিনি মানবাজার ২ ব্লকের খাদ্য পরিদর্শক। সম্প্রতি বান্দোয়ান ও মানবাজার ১ ব্লকেরও দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়। মানবাজার ১ ব্লকের পরিদর্শক তিন সপ্তাহ আগে অন্যত্র বদলি হয়েছেন। অফিসে কর্মীর সংখ্যাও কম। এখন মাত্র দু’জন রয়েছেন। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেরে কিছু কাজ জমে ছিল। সব মিলিয়ে কাজ প্রচুর হলেও কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। তাই কার্ড দিতে দেরি হচ্ছে।” মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব বলেন, “বাসিন্দাদের ক্ষোভের কারণ রয়েছে। অনেকেই বুধবার রাত থেকে কার্ডের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু এখানে খাদ্য দফতরের অফিসে পরিকাঠামোরও অভাব রয়েছে। তাই ঠিক হয়েছে, প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে লোকজন মাসের চারটি বৃহস্পতিবার আলাদা ভাবে এখানে আসবেন। প্রতিটি পঞ্চায়েতে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” |