সান্ত্বনা বিনিময়। ম্যাচের পর র্যান্টি ও লুসিয়ানো। |
সাতৌরির কথা নয় মানা গেল। চরম আর্থিক সঙ্কটে এখনও ‘ভিটামিন এম’ জোগাড় করতে পারেননি কর্তারা। ফুটবলাররা মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। কিন্তু মহমেডান কোচ আবদুল আজিজ? যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভাণ্ডারে ভরা। তবুও মরসুমে প্রথমবার চার বিদেশি নিয়ে নেমেও আলো জ্বালাতে পারলেন না। উলটে রেফারির উপর ক্ষুব্ধ মহমেডান কোচের অভিযোগ, “আমাদের ডাকাতি করেছে রেফারি। না হলে তিন পয়েন্ট নিয়েই ফিরতাম।” রেফারির ‘ডাকাতি’টা কী, বোঝা না গেলেও, আজিজের সাদা-কালো ব্রিগেড যে ফুটবল খেলল, তাতে যে কোনও পরিকল্পনা ছিল না, সেটা স্পষ্ট। ফুটবলারদের মধ্যে চরম বোঝাপড়ার অভাব। বল ধরা-ছাড়ার প্রাথমিক জ্ঞানটুকুও নেই। আজিজের ট্রেনিংয়ে আদৌ কোনও লাভ হচ্ছে কি না টোলগে-পেনদের, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। সবচেয়ে বড় সমস্যা ফরোয়ার্ডে। একসঙ্গে অন্তত দশ-এগারো ম্যাচ খেলে ফেললেও, জোসিমার-টোলগের মধ্যে এখনও কোনও রসায়ন তৈরি হয়নি। উলটে দু’জন দু’জনের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ মাঠে! গোলের সুযোগ থাকলেও কেউ কাউকে বল বাড়াবেন না। অতিরিক্ত ‘বল হোল্ড’ করার বদভ্যাসে বারবার বিপক্ষের রক্ষণে আটকে গেলেন দু’জনেই।
এই ম্যাচ থেকে মহমেডানের প্রাপ্তি বলতে চোট সারিয়ে লুসিয়ানোর দলে ফেরা। স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় গোলের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে, গোল খাওয়ার রাস্তা একেবারে সুরক্ষিত ব্রাজিলিয়ান স্টপারের হাতে। এত দিন বাদে নেমেও বেশ ভাল ‘বল ডিস্ট্রিবিউশন’ করলেন। বিপক্ষের ‘সেকেন্ড বল’ খেললেন। |
পেনকে সেরার পুরস্কার দিচ্ছেন নবি। বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে। |
লুসিয়ানোর পাশে নজর কাড়লেন ফুলচাঁদ হেমব্রম-ও। কিন্তু যে দলে রাকেশ মাসিদের মতো ফুটবলারও থাকেন, তাঁরা সতীর্থের পরিশ্রমের যোগ্য মর্যাদা দেবেন কী করে?
মহমেডান মাঝমাঠে পেন খেললেও তাঁকে সেই ফর্মে পাওয়া গেল না। ইউনাইটেডের ফুটবলাররা সেই সুযোগে দু’-একবার আক্রমণে উঠলেও প্রকৃত গেমমেকারের অভাবে গোলের মুখ খুলতে পারেনি। সাতৌরি স্বীকার করছেন, “গত বছর আমার দলে কার্লোস, জেমসের মতো খেলা তৈরির লোক ছিল। এ বছর শুধু লালকমল আছে, কিন্তু ওর চোট।” শেষ আঠারো মিনিট দশজনের ইউনাইটেডকে পেয়েছিল মহমেডান। জোসিমারকে রাফ ট্যাকল করার অপরাধে লালকার্ড দেখেন বেলো। কিন্তু সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি পেনরা। ইউনাইটেড গোলকিপার সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়ের তৎপরতায়।
ম্যাচের সেরা হলেন পেন। লুসিয়ানোর বদলে পেন কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, মহমেডান-ইউনাইটেড লড়াই থেকে কি কেড়ে নেওয়া উচিত ‘ছোট ডার্বি’র তকমা? সেই আবেগ, উন্মাদনা কিছুই তো নেই। আছে কেবল উদাসীনতা! |