দুর্ঘটনা এড়াতে এবং দ্রুত প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য চন্দননগরের রানিঘাটের আদলে চুঁচুড়ার অন্নপূর্ণা ঘাটকে নতুন ভাবে গড়ার পরিকল্পনা করেছে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভা। এ জন্য কেএমডিএ-র সাহায্য নিচ্ছে তারা। দিন কয়েক আগে কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরা অন্নপূর্ণা ঘাট পরিদর্শনও করে গিয়েছেন।
হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ায় দুর্গাপুজো বা কালীপুজোর সংখ্যা নেহাত কম নয়। বেশির ভাগ প্রতিমাই নিরঞ্জন হয় প্রেমনগর মাঠ লাগোয়া অন্নপূর্ণা ঘাটে। কিন্তু প্রতি বছর বিসর্জনের সময়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটায় পুর কর্তৃপক্ষ ঘাটের চেহারা পরিবর্তন করতে চান। বিসর্জনের সুবিধার জন্য কয়েক বছর আগে ঘাটের সিঁড়ির মাঝ বরাবর রেললাইনের মতো লোহার পাত বসানো হয়। ঘাটের নীচের দিকে দু’টি ধাপও তৈরি করা হয়। প্রতিমা ওই লোহার পাত বেয়ে নামিয়ে আনা হয় জলে। কিন্তু এই ব্যবস্থাতেও দুর্ঘটনা এড়ানো যাচ্ছে না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নামাতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই প্রতিমা উল্টে যায়। তা ছাড়া, ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। প্রতি বার অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ প্রতিমা ভাসান হয় ওই ঘাটে। বিসর্জন-পর্ব মিটতে মাঝরাত পেরিয়ে যায়। |
তাই দুর্ঘটনা এড়াতে এবং বিসর্জন-পর্ব দ্রুত মেটানোর জন্য রানিঘাটের আদলে অন্নপূর্ণা ঘাটকে সাজানোর পরিকল্পনা হয়েছে। অর্থের সংস্থান করবে পুরসভা। কারিগরি সহায়তা করবে কেএমডিএ।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা নিরঞ্জন হয় রানিঘাটে। বড় বড় তিন-চারটি প্রতিমা যাতে এক সঙ্গে নিরঞ্জন করা যায়, সে জন্য ওই ঘাটের কংক্রিটের ঢাল চওড়া করা হয়েছে।প্রতিমার লরি পিছন দিক করে সরাসরি জলের কাছে পৌঁছে যায়। লরি ঢালের শেষ অংশে পৌঁছনোর পরে প্রতিমা জলে ফেলা হয়। অনেকটা এই ধাঁচে অন্নপূর্ণা ঘাটকে গড়ার পরিকল্পনা হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিঘাটের মতোই অন্নপূর্ণা ঘাটে যাতে দু’টি লরি এক সঙ্গে নেমে প্রতিমা বিসর্জন করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হবে। পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “অন্নপূর্ণা ঘাটেই শহরের অধিকাংশ প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। কিন্তু বিসর্জনে অসুবিধা হচ্ছে। কখনও দুর্ঘটনাও ঘটছে। তাই রানিঘাটের আদলে ঘাট তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। সেই মতো কেএমডিএ-র কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তারা এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তাঁরা আমাদের খরচের হিসাব দিলেই কাজ শুরু হবে।” কেএমডিএ-র নির্বাহী বাস্তুকার চন্দন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ওই পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য পুরসভার প্রস্তাব কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে প্রস্তাব পাশ হয়ে আমাদের হাতে পৌঁছলেই কাজ শুরু হবে।” |