|
|
|
|
জানা নেই গন্তব্য, ১৬ দিন আটকে দুবাইয়ের বিমানবন্দরে
সংবাদ সংস্থা • দুবাই |
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে ফিরতে চান না। কিন্তু বিদেশের মাটিতে পা ফেলারও অনুমতি মিলছে না। ফলে বিমানবন্দরেই বন্দি। টানা ষোলো দিন!
স্টিভেন স্পিলবার্গের ছবি ‘দ্য টার্মিনাল’-এর গল্প নয়। যদিও প্রায় একই রকম সেই কাহিনি। ছবিতে নায়ক টম হ্যাঙ্কস জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে নামার পরে জানতে পারেন, তাঁর পাসপোর্টের আর বৈধতা নেই। বিপ্লবের জেরে তাঁর দেশ ক্রাকোঝিয়া ভেঙে গিয়েছে। এমন নামের কোনও দেশকে আমেরিকা এখন আর স্বীকৃতি দেয় না।
ওয়াসফি তায়সির জারাডেরও একই অবস্থা। ঘোর বাস্তবের এই চরিত্রটি সিরিয়ার মানুষ। মাদক-কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় দুবাইয়ের জেলে বন্দি ছিলেন দীর্ঘদিন। মুক্তির পর জানতে পারেন দেশে বিদ্রোহ চলছে। সেনার সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধে মারা গিয়েছেন বহু মানুষ। রাজধানী দামাস্কাসের শহরতলি অঞ্চলে বিষগ্যাস হানায় মৃত্যু হয়েছে অসংখ্য শিশুর। এ অবস্থায় অনেকের মতো তাঁর পরিবারও দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আশ্রয় নিয়েছে জর্ডনের উদ্বাস্তু শিবিরে।
এখন উপায়? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হন তিনি। অনুরোধ করেন, জর্ডন যেতে দেওয়া হোক তাঁকে। কিন্তু জারাডের সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। কারণ, তত দিনে তাঁর পাসপোর্টের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। সিরিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশে যেতে চান জারাড। কিন্তু জর্ডনের মতো একই কথা জানায় লেবানন ও তুরস্কও। দুবাই বিমানবন্দর থেকে এক-একটা দেশে যাওয়া এবং একই বিমানে ফিরে আসা। বারবার একই ঘটনা ঘটতে থাকে।
জারাডের সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজতে এক দফতর থেকে অন্য দফতরে ফোন চালাচালি চলছে এখনও। দুবাই বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনালে এখনও বন্দি জারাড।
এর মধ্যেই এই খবর পৌঁছে গিয়েছে সংবাদমাধ্যমের কাছে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপায় খুঁজছে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। কেটে গিয়েছে ১৬টা দিন।
যাকে ঘিরে এত কাণ্ড, সেই জারাড কী বলছেন? তিনি জানালেন, দিন পিছু একটা করে হ্যামবার্গারের উপর রয়েছেন। স্নান সারছেন বিমানবন্দরের শৌচাগারেই। কবে মুক্তি মিলবে, জানা নেই। তাঁর নতুন পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাড়ির লোকেরা। সিরিয়ার লাটাকিয়ায় যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল জারাডকে। কিন্তু রাজি হননি তিনি। দেশের
ফেরার কথা শুনে বললেন, “তার থেকে বরং যদি জেলেই ফিরে যেতে পারতাম!” |
|
|
|
|
|