|
|
|
|
বৃষ্টি থেকে সব্জি বাঁচাতে পলিশেডে চাষের পরামর্শ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালনা ও কাটোয়া |
অক্টোবর শেষ হতে চলল। কিন্তু বৃষ্টির বিরাম নেই। ফলে রাস্তাঘাট যেমন জল থইথই তেমনই চাষেও দেখা গিয়েছে সমস্যা। অতিরিক্ত বৃষ্টির হাত থেকে সব্জিখেতকে বাঁচাতে আরও বেশি করে পলিশেড ও অনুসেচ পদ্ধতি অবলম্বনের পরামর্শ দিলেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার এই বিষয়ে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয় কাটোয়ার একটি লজে। ছিলেন খড়গপুর আইআইটি-র তিন কৃষি বিশেষজ্ঞ, জেলা কৃষি আধিকারিক ও কাটোয়া মহকুমা কৃষি আধিকারিক। এই আলোচনায় বিশেষজ্ঞেরা জানান, পলিশেড ব্যবস্থায় চাষ করলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। |
|
নিরাপদে চাষ। |
এ দিনের আলোচনায় অনুসেচ পদ্ধতিতে চাষ নিয়েও আলোচনা করা হয়। অনুসেচ পদ্ধতিতে চাষে পাইপের মাধ্যমে জল দেওয়া যাবে। সাধারণত সব্জি চাষে জল সব্জিতে পৌঁছায় কাঁচা নালার মধ্যে দিয়ে। এক্ষেত্রে পাইপ যাবে মাটির নীচে দিয়ে। সরাসরি সব্জির শিকড়ে চলে যাবে জল। ইফকোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভায় ঠিক হয়েছে, চাষিদের এই দুই পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হবে। সব্জি ছাড়াও পিঁয়াজ ও আলু চাষে এই পদ্ধতিতে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার সব্জি চাষের প্রায় সবটাই হয় পূর্বস্থলী-১ ও ২ ব্লকে। চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত সব্জি বিক্রি করেন জিউধারা, পারুলিয়া, কালেখাঁতলার মতো পাইকারি বাজারগুলিতে। এখান থেকেই সব্জি ট্রাকে করে ছড়িয়ে যায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এ বছর ক্রমাগত বৃষ্টিতে চাষের জমিতে জমে গিয়েছে জল। ছড়িয়ে পড়ছে ছত্রাক জাতীয় গোড়াপচা রোগ। এর ফলে গাছ হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ফলনের উৎপাদন। খোলাবাজারে বাড়ছে দাম।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পলিশেড পদ্ধতিতে চাষে আগে জমিতে মাটির উপরে বাঁশ, কাঠ অথবা লোহার পাইপ দিয়ে একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে। |
|
বৃষ্টি থেকে সব্জি বাঁচাতে পলিশেডে চাষ বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। |
এই কাঠামোর উপরের অংশটি হবে ঢালু। বাতাস ও সূর্যের আলো আটকাতে কাঠামোর উপর লাগাতে হবে পলিথিনের চাদর। ভিতরের অংশের মাথার দিকে লাগানো হবে তাপ প্রতিরোধক একটি বিশেষ জাল। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতিতে চাষের জন্য দরকার উঁচু জমি ও ভাল জল নিকাশি ব্যবস্থা। পলিশেড তৈরি করতে প্রতি স্কোয়ার ফুটে খরচ হবে প্রায় চারশো থেকে সাড়ে সাড়ে চারশো টাকা।
কালনা মহকুমা কৃষি দফতরের সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “মহকুমার পূর্বস্থলী-১ ও ২ ব্লকের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল সব্জি চাষের উপর। অতিরিক্ত বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে পলিশেড পদ্ধতির বিকল্প নেই। এই পদ্ধতি বাইরের অতিরিক্ত সূর্যের আলো, গরম ও ঠান্ডা বাতাস, কুয়াশা, শিলাবৃষ্টি থেকে ভিতরের ফসলকে রক্ষা করে।” পার্থবাবুর দাবি, “জেলা উদ্যান পালন দফতর থেকে মন্তেশ্বর, পূর্বস্থলী-১ ও পূর্বস্থলী-২ ব্লকের কয়েক জন চাষিকে মোট খরচের অর্ধেক ভর্তূকি দিয়ে পলিশেড তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।”
|
—নিজস্ব চিত্র। |
|
|
|
|
|