পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিল প্রায় আড়াই মাস আগে। কিন্তু সেই পরীক্ষা ফের নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে কলা ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন ছাত্রছাত্রীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজি বিভাগের এমএ চতুর্থ সেমেস্টারের চতুর্থ পত্রের পরীক্ষা হয়েছিল গত ২ অগস্ট। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৭ নভেম্বর ফের ওই পত্রের পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “কর্মসমিতিতে ওই পত্রের পরীক্ষা নতুন করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তা আমরা ছাত্রছাত্রীদের জানিয়েছি।” কেন আগের পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁ বলেন, “পরীক্ষাটি নেওয়ার আগে জুলাইয়ের শেষ দিকে প্রশ্নের সঙ্গে বিষয়গত মিল-সহ কিছু সাজেশন বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করছে বলে জানা যায়। সেই সাজেশন বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা পড়ার পরে উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার একটি কমিটি তৈরি করে ঘটনার তদন্ত করান। তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে নতুন করে ওই পত্রের পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে।” |
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান নন্দিনী ভট্টাচার্যের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ওই বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ওই পত্রের মোট ৫০ নম্বরের মধ্যে ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়। এই পত্রে ১৯৫০ সালের পরবর্তী সময়ের বৃটিশ সাহিত্যের ইতিহাস পড়ানো হয়। প্রশ্নও হয় বৃটিশ সাহিত্য নিয়ে। এ বার এই পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৮১ জন ছাত্রছাত্রী। গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে সমীরণ চট্টরাজ, মধুপর্ণা ভট্টাচার্যেরা বলেন, “পরীক্ষা হয়েছে ২ অগস্ট। নভেম্বরে ফল প্রকাশ হওয়ার কথা। তার মধ্যে আচমকা বুধবার দেখি, ওই পত্রের পরীক্ষা নতুন করে নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। আমরা অবাক ও ক্ষুব্ধ। তারই প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।” পড়ুয়াদের দাবি, নতুন করে পরীক্ষা নিলে ফল প্রকাশে দেরি হবে। তত দিনে চাকরি নানা পরীক্ষার সুযোগ হারাবেন তাঁরা।
পুজোর ছুটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগ বন্ধ। তাই এ দিন ইংরেজি বিভাগে গিয়েও সেটি বন্ধ দেখতে পান ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরা ছাত্র সংসদ অফিসে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সন্তু ঘোষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্ভীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনেছি, ওই পত্রের প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। তাই নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু ফের পরীক্ষা নিলে তা ছাত্রছাত্রীদের কাছে এক রকমের বিড়ম্বনা ছাড়া আর কিছু নয়। উপাচার্য এখন বর্ধমানে নেই। তিনি ফিরলেই আমরা তাঁর কাছে আবেদন জানাব, ওই পরীক্ষা যেন আর না নেওয়া হয়।” |