বিষক্রিয়ায় এক দম্পতির মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মালদহের রতুয়ার আড়াইডাঙা পঞ্চয়েতের নেস্তা গ্রামে মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। রাতেই মালদহ হাসপাতালে মৃত্যু হয় দম্পতির। পারিবারিক বিবাদে তাঁদের বিষ খাইয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ তুলেছেন বধূর দাদা। পুলিশ জানায়, মৃত দম্পতির নাম গৌতম মণ্ডল (২৯) ও মৌসুমী মণ্ডল (২৫)। মৌসুমীদেবী ৫ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। গৌতমবাবুর বাড়ির লোক ঘটনার পর পালিয়ে গিয়েছেন। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই দম্পতির বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তপেশ মণ্ডলের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে গৌতমবাবু। তিনি ট্যাক্সি চালাতেন। এছাড়াও তাঁদের পারিবারিক মুরগি খামার ও মাছের ব্যবসা রয়েছে। বছর খানেক আগে তিনি ভালবেসে বিয়ে করেন মৌসুমীদেবীকে। মৌসুমীদেবীর বাবার বাড়ি রতুয়ার মির্জাতপুরে। তাঁর তিন বছর বয়সে বাবা-মা বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পর থেকে তিনি মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে মানিকচকের খয়ের তলায় দাদুর বাড়িতে থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গৌতমবাবু নিজের মতে বিয়ে করায় তা তাঁর পরিবার মেনে নেয়নি। পরে পারিবারিক মুরগির ফার্ম ও মাছের ব্যবসা তাঁর বাবা ছোট ভাই দীপঙ্করের নামে করে দেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে বাবা ও ভাইয়ের তাঁর মনোমালিন্য শুরু হয়। টাকা পয়সা নিয়ে দুই তরফে গোলমাল হত বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতেও গোলমাল হয়। তারপর রাতে ওই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
গৌতমবাবুর বোন লিপিকা মণ্ডল বুধবার বলেন, “ওঁরা খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়েছিল। তারপর গোঙানির আওয়াজ শুনে বাড়ির লোকজন জানতে পারেন ওরা বিষ খেয়েছে। বাড়ির লোকজন ওঁদের কেন মারতে যাবে? ভিত্তিহীন অভিযোগ।” মৃত মৌসুমীদেবীর দাদা মনা স্বর্ণকার বলেন, “বোন-জামাইকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। বোন গর্ভবতী ছিলেন। এই অবস্থায় কেন সে আত্মহত্যা করতে যাবে? পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা আড়াইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অমল পাঠক বলেছেন, “স্বেচ্ছায় বিয়ে করায় বড় ছেলের বিয়ে তাঁর পরিবার মেনে নিতে পারেনি বলে শুনেছি। পুলিশ তদন্ত করলে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।” |