শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-এর পরিকাঠামোর উন্নয়নের দেড় কোটি টাকার হিসাবের গরমিল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো ওই টাকা খরচের নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন খোদ মালদহ শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ। দুর্নীতির অভিযোগে দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্য কারিগরি শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হন মালদহ আইটিআই-এ কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। পর রাজ্যের কারিগরি শিক্ষাদফতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধিকর্তা হরিপ্রসন্ন দে বলেন, “মালদহ জেলা শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিকাঠামো উন্নয়নের খরচের কিছু গরমিল হয়েছে। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আইটিআই কলেজের অধ্যক্ষ তাপস কুমার ঘোরাই বলেন, “পরিকাঠানো উন্নয়নে খরচ করা এক কোটি ৫২ লক্ষ টাকার কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ কাজের কোনও ওয়ার্ক অর্ডার খুঁজে পাওযা যায়নি। এমন কী, ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ফি বাবদ ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ৪ লক্ষ ৯ হাজার টাকা ক্যাশ বইয়ে দেখানো হয়নি। গোটা বিষয়টি রাজ্যের কারিগরি দফতরের অধিকর্তাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।” কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা বর্তমানে রাজ্য কারিগরি শিক্ষা দফতর উপ-অধিকর্তা তুষার কুমার নাথ বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারে যে টাকা পাঠিয়েছিল সেই টাকায় কলেজের অনেক উন্নয়ন করেছি। সমস্ত খরচের কাগজপত্র কলেজেই ছিল। এখন পাওয়া যাচ্ছে না কেন বলতে পারব না। এটা ষড়যন্ত্রও বলে মনে হচ্ছে। আমি গত ১৪ জানুয়ারি তাপস কুমার ঘোরাইকে চার্জ বুঝিয়ে এসেছি। তার পরেই দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। রাজ্য কারিগরি দফতর তদন্ত করছে। তদন্তে আমার গাফিলতি কিংবা দুর্নীতি প্রমাণ হলে শাস্তি মাথা পেতে নেব।
জেলা শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০০৭—২০০৮ আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সমস্ত আইটিআইকে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আড়াই কোটি টাকা করে মঞ্জুর করে। মালদহের জেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে আড়াই কোটি টাকা পায়। সেই ইনস্টিটিউট ম্যনেজমেন্ট কমিটির সম্পাদক ছিলেন তৎকালীন কলেজের অধ্যক্ষ তুষার কুমার নাথ। ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের প্রাক্তন সভাপতি দেবব্রত বসু।
দেবব্রতবাবু বলেন, “ওই গরমিলের বিষয়টি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ আমাকে জানিয়েছেন। গরমিলের পিছনে আগের অধ্যক্ষই নয়, জেলা শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ও কারিগরি শিক্ষা দফতরের অনেকেই যুক্ত রয়েছে। এত টাকা গরমিলের পরেও কোনও ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি।” তিনি জানান, আমি কমিটির চেয়ারম্যান ঠিকই। কিন্তু কমিটির সচিব ছিলেন আগের জেলা শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ। খরচের হিসাব নিকাশের সমস্ত কাগজপত্র অধ্যক্ষের হেপাজতেই থাকে। কেন খরচের কাগজপত্র নেই এর জবাব আগের অধ্যক্ষকেই দিতে হবে। আর কারিগরি শিক্ষা দফতরের উচিত দ্রুত তদন্ত করে সব কিছু প্রকাশ্যে আনা। |