পেটের রোগ ছড়াল খয়রাশোলের ভবনীগঞ্জ গ্রামে। বুধবার পর্যন্ত ওই গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ২৫ জন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত মোট ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে শিশু ও মহিলাদের সংখ্যাই বেশি। বিএমওএইচ স্বরূপ মাড্ডি বলেন, “আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। নতুন করে যাতে কেউ আক্রান্ত না হন, সেই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” |
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পানীয় জল গভীর নলকূপ থেকে সংগ্রহ করলেও বাসনপত্র ধোয়ার কাজটা মূলত গ্রামের দু’টি পুকুরে করে থাকেন লোকজন। গ্রামবাসী ও প্রশাসনের অনুমান, বর্ষায় নিকাশি নালা থেকে জল গড়িয়ে পুকুরে জমা হওয়ার জন্য অথবা অধিকাংশ বাড়িতে শৌচাগার না থাকার ফলে নোংরা জল পুকুরে জমা হয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে বুধবার সকালে এলাকায় যান দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা। এলাকায় যান খয়রাশোলের বিডিও মহম্মদ ইসরার ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা ধীবরও। বিডিও বলেন, “প্রথমে অক্রান্তদের মধ্যে যাঁদের অবস্থা তুলনায় খারাপ, তাঁদেরকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। বাকিদের চিকিৎসা গ্রামে রেখেই চলতে থাকে। পরে দু’টি পুকুরের জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। নলকূপের পাশে ব্লিচিং ছড়ানো হলেও সকলকেই জল ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
বুধবার দুপুরে নাকড়াকোন্দা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, প্রতিবন্ধী শিশু তরুণ মণ্ডল, শিশু জিৎ ঘোষ, বধূ গীতা বাঁশরী, বনলতা ঘোষ, দৈবকী বাউড়ির মতো আরও অনেকে পর পর বেডে শুয়ে আছেন। চিকিৎসক ও নার্স ব্যস্ত। আক্রান্তরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিক মণ্ডল বলেন, “পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেটা নিশ্চিত করতে সকালে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা স্থলে পৌঁছেছে ব্লক ও জেলাস্তরের মেডিক্যাল টিম। গ্রামের পুকুরগুলির জল পরিস্রুত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও নানারকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনিতেই পর্যাপ্ত ওষুধ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে। এর পরেও গ্রামের আশা কর্মীদের কাছে প্রয়োজনীয় ওষুষ পাঠানো হয়েছে। ব্লক প্রশাসনও যথেষ্ট যাহায্য করেছে।”
|