ছ’মাস ধরে পড়ে ডায়ালিসিস যন্ত্র, সমস্যায় দুঃস্থেরা
শুধুমাত্র টেকনিশিয়ানের অভাবে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেনা ডায়ালিসিস মেশিন পড়ে রয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। অথচ গাদা গাদা টাকা ব্যয় করে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পরিষেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন দুঃস্থরা। সুপার দেবব্রত দাস জানিয়েছেন, বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে এগিয়ে আসেন দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা দেন তিনি। নিখিলবাবু পেশায় চিকিৎসক। তাঁর অভিজ্ঞতা বলে, কিডনির রোগে ভোগা গরীব মানুষ ডায়ালিসিস করার খরচ জোগাতে হিমসিম খান। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি ডায়ালিসিস মেশিন কেনার পরামর্শ দেন তিনি। এরপরেই এপ্রিল মাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ডায়ালিসিস মেশিন কেনে। কিন্তু টেকনিশিয়ানের অভাবে মেশিনটি চালু করা যায়নি। ফলে কেনার ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও মেশিনটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কিডনির রোগে আক্রান্তরা। বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম থেকে চড়া দাম দিয়ে ডায়ালিসিস করাতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
যন্ত্রটি এভাবে পড়ে থাকায় ক্ষুব্ধ রোগী থেকে হাসপাতালের চিকিৎসক সবাই। বিধাননগরের ভ্যামবে কলোনির বাসিন্দা সোনালি শিকদার বলেন, “আমার শ্বশুরের নিয়মিত ডায়ালিসিস করাতে হয়। স্বামী বেসরকারি কারখানার ঠিকা কর্মী। আয় সামান্য। সরকারি হাসপাতালে এই ব্যবস্থা চালু হলে বড় উপকার হত।” একই কথা জানিয়েছেন জে সি বসু রোড বস্তির রথীন দাসও। তিনি জানান, তাঁর স্ত্রী ভুগছেন কিডনির রোগে। সিটি সেন্টারের একটি নার্সিংহোমে নিয়মিত ডায়ালিসিস করাতে যান। হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সহ-সভাপতি মিহির নন্দী বলেন, “কত হাসপাতালে এই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রটি নেই। আমাদের এখানে রয়েছে। অথচ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অবিলম্বে একজন টেকনিশিয়ান দরকার।” তিনি জানান, ওয়ারেন্টি পিরিয়ড পেরিয়ে যাচ্ছে। ব্যবহার করতে গিয়ে কোনও ত্রুটি ধরা পড়লে তা সারিয়ে বা বদলে দিত সংস্থা। কিন্তু পরে আর সে সুযোগ থাকবে না। তখন হাসপাতালের অর্থ ব্যয় করে সমস্যা মেটাতে হবে।
হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাস জানিয়েছেন, বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তিনি বলেন, “এই হাসপাতালে টেকনিশিয়ানের ওই পদটি এখন নেই। সে জন্যই সমস্যা হচ্ছে।” আসানসোল স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিকাঞ্চন সাহা জানিয়েছেন, তিনি নতুন কাজে যোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিধায়ক নিখিলবাবু জানান, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তিনি ডিরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিস-এ একাধিকবার ফ্যাক্স পাঠিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, “কালীপুজোর পরে ব্যক্তিগত ভাবে সেখানে গিয়ে আমি এই সমস্যার সুরাহা করে আসব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.