ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ২২ মাস পর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করল তদন্ত কমিশন। বুধবার দুপুরে সল্টলেকের তন্তুজ ভবনের আটতলায় বিচারপতি তপন মুখোপাধ্যায় কমিশনে ওই ঘটনার চার জন সাক্ষীকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা প্রত্যেকেই মৃতের পরিজন। তবে এ দিন দু’জন সাক্ষী হাজির হয়েছিলেন। ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে বলে কমিশন জানিয়েছে।
২০১১ সালের ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালের আগুন লাগে। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান নব্বইয়েরও বেশি মানুষ। সেই ঘটনায় পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি বিচারবিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। এ দিন সাক্ষ্য দিতে এসেও একই কথা বলেছেন মৃতদের পরিজনেরা।
আমরি-কাণ্ডে স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন কসবার হালতু-রামলালবাজারের শুভাশিস চক্রবর্তী। সাক্ষ্য দিয়ে বেরিয়ে এসে তিনি বলেন, “আমরি কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কথাই বলেছি। সে দিন ভোরে স্ত্রী ফোন করে আগুন লাগার কথা বলেন। চারটে কুড়িতে পৌঁছে যাই হাসপাতালে। কিন্তু ওরা কিছুতেই ভিতরে ঢুকতে দেয়নি।”
ওই ঘটনায় আর এক মৃত মৃদুলা গুহঠাকুরতার মেয়ে পারমিতাও সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন। কমিশন থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “সে দিন আগুন লাগার পর তিন ঘন্টা মা বেঁচেছিলেন। তা-ও মাকে বাঁচাতে পারেনি ওরা। এটা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছাড়া আর কী?”
শীঘ্রই খুলতে চলেছে ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতাল। সে প্রসঙ্গে শুভাশিসবাবুর বক্তব্য, “সাধারণ মানুষের স্বার্থে হাসপাতাল খুলুক। তার আগে অগ্নিবিধি মানা হচ্ছে কি না, তা অবশ্য দেখে নেওয়া উচিত।” একই মত পারমিতাদেবীর। তিনি বলেন, “এমন ঘটনায় আর কাউকে যেন প্রিয়জনকে হারাতে না হয়।”
ঘটনার পর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হতে দু’বছর লাগল কেন? কমিশন জানায়, সাক্ষীদের নাম জোগাড় করা থেকে শুরু করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন-সহ নানা কাজ করতে প্রায় দু’বছর লেগে গিয়েছে।
|