ধূপগুড়ির ব্লকের সোনাতলা হাটে ন্যূনতম পরিষেবাও মেলে না বলে ক্রেতা এবং ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। নিকাশির পরিকাঠামো নেই, পানীয় জল সরবারহের ব্যবস্থা নেই, নিয়মিত হাট সাফাই হয় না, নেই শৌচাগারও। শালবাড়ি স্টেশন লাগোয়া সোনাতলা হাট ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগগুলি উঠলেও সমাধানে কেউ উদ্যোগী হয়নি বলে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ বাসিন্দারা ক্ষোভ জানিয়েছেন।
১৯৬৮ সালে শালবাড়ির কিছু বাসিন্দার দান করা জমিতে হাটটি গড়ে ওঠে। সোনাতলা হাট নামে পরিচিতিও পায়। বর্তমানে হাটের স্থায়ী ব্যবসায়ীর সংখ্যা পাঁচশোর কাছাকাছি। সপ্তাহে দু’দিন, রবি এবং বৃহস্পতিবার বড় হাট হয়। সে দিনগুলিতে অস্থায়ী দোকানের সংখ্যা ৫০০ ছুঁয়ে যায়। ক্রেতা-বিক্রেতা মিলিয়ে আট-দশ হাজার মানুষের ভিড় জমে হাটে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শৌচাগারের অভাবে বাইরে থেকে ক্রেতারা এসে বিপাকে পড়েন। বাধ্য হয়ে দোকানের পেছনে বা ফাঁকায় শৌচকর্ম করা হয়। এর ফলে হাটে পুঁতিগন্ধময় পরিবেশ বলে অভিযোগ। নিকাশি নালা না থাকায় বর্ষায় হাটের রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। |
গাদং ২ পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু বর্মন বলেন, ‘‘হাটে জরুরি পরিষেবায় কিছু ঘাটতি রয়েছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। জলের জন্য জনস্বাস্থ্য দফতর কাজ শুরু করেছে। আশা করছি জলের সমস্যা মিটবে। বাকিগুলিও সমাধানের চেষ্টা চলছে।” হাটে পানীয় জলের উৎস বলতে দু’তিনটি নলকূপ। সেখান থেকে শুধুই ঘোলা জল মেলে। জল খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কায় অনেকেই তা পান করেন না। সেই নলকূপগুলিও বেশিরভাগ সময় বিকল থাকে বলে অভিযোগ। সমস্যা মেটাতে ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে ২০০৫ সালে জেলা পরিষদ থেকে ৩টি জলাধার তৈরি করে পাম্পে জল তোলার ব্যবস্থা করলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাস দুই পরেই পাইপ ফেটে গিয়ে জল পড়া বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে আর মেরামত হয়নি। হাট তৈরির পরে কোনও পরিকল্পনা না করায়, স্থান সঙ্কুলান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। কৃষি অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার আশপাশের কৃষকরা উৎপাদিত সব্জি, ধান, পাট হাটে এনে বিক্রি করার উপযুক্ত জায়গা পাচ্ছেন না বলে স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে অভিযোগও করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে হাটের ব্যবসায়ী শ্রীদাম বসাক বলেন, “হাটের পরিকাঠামো ঠিক না থাকায়, ব্যবসা করাই দায় হয়ে পড়ছে। প্রতি সপ্তাহে বড় হাটের দু’দিন জায়গা পাওয়া যায় না।” সোনাতলা হাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মানিক দেবনাথ এই বিষয়ে বলেন, “নিকাশি নালা আর পানীয় জলের সমস্যার কথা আমরা দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে জানিয়েছিলাম। যদিও কেউই উদ্যোগী হননি। দ্রুত কাজ না হলে আন্দোলন শুরু করতে বাধ্য হব।” |