শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারে শাক-সব্জির দাম আকাশ ছোঁয়া। অথচ পুলিশ প্রশাসনের তরফে তা নিয়ন্ত্রণে এখনও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের বিভিন্ন শহরে আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে টাস্কফোর্স কাজ করছে। শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসনের তরফে এখনও সে ধরনের ব্যবস্থা না-নেওয়ায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। বুধবার শহরের বিধান মার্কেট, সুভাষপল্লি বাজার, ফুলেশ্বরী বাজার-সহ অন্যান্য বাজারগুলিতে পেঁয়াজ, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে চড়া দামে। কোনও বাজারে ৭০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। কোথাও তারও বেশি, ৮০ টাকা দরে। সব্জির দাম এখনই নিয়ন্ত্রণ না করলে সামনে দেওয়ালিতে তা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের।
মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, “আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছি।” পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন জানান, পুজোর সময় সবজির দাম একটু বেড়ে যায়। তবে তাঁরা বিষয়টি নজরদারি করছেন। কেউ যদি কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করে তবে কড়া ব্যবস্থা নেবেন। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের ‘অনিয়ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়শন’-এর সভাপতি গোপাল প্রসাদ দাবি করেন, কিছু দিনের মধ্যেই রাজস্থান থেকে পেঁয়াজের আমদানি হলে দাম কমবে। তবে এ দিন পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরো বাজারে শাক-সবজির দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রামে ২০-৩০ টাকা বেশি। তাতেই বাসিন্দাদের একাংশ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। |
এ দিন সুভাষপল্লি বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নান্টু সরকার। তিনি বলেন, “এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে শাক-সব্জি খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে অবিলম্বে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” ব্যবসায়ীদের দাবি জোগান কম থাকাতেই দাম বেড়েছে শাক সব্জির। সুভাষপল্লি বাজারের ব্যবসায়ী বিধান সাহার কথায়, “পুজোর মরসুমে চাহিদা বেশি থাকে। অথচ বর্ষার শেষে এই সময় সব্জির জোগান কম থাকে। এবার জোগান অনেকটাই কম। আশা করছি কিছু দিনের মধ্যে সবজি সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।” বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ী বাপি সাহা জানান, “শাক সব্জি আনা-নেওয়ার খরচ আগের চেয়ে অনেকটা বেড়ে যাওয়াতেও দাম বেড়েছে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, কিলো দরে এক দাম আবার কম নিলে তুলনায় বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে কোনও নজরদারিই নেই।
পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত প্রশাসনের তরফে দাম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করেন শিলিগুড়ি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সত্যনারায়ণ মণ্ডল। তিনি বলেন, “জোগান কম থাকা, পরিবহণ খরচ বেড়ে যাওয়া দাম বৃদ্ধির কারণ। তবে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি, সাধারণ মানুষ সব দিক ভেবে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” সব্জির দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কৃত্রিম চাহিদা তৈরির মতো বিষয় কাজ করছে কি না খতিয়ে দেখার দাবি করেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অনুপ রায়। তিনি বলেন, “খুচরো এবং পাইকারি বাজার উভয় ক্ষেত্রেই দাম নিয়ন্ত্রণ জরুরি।” শহরের নাট্য ব্যক্তিত্ব শ্যামাপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানান, এখনও কেন টাস্কফোর্স তৈরি করা হয়নি তা তিনি বুঝছেন না। তা ছাড়া সাধারণ বাসিন্দাদেরও প্রতিবাদ জানাতে হবে বলে মনে করেন।
|
পাইকারি দর |
শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার |
বিধান মার্কেট |
ফুলেশ্বরী বাজার |
সুভাষপল্লি বাজার |
পেঁয়াজ ৩৩-৫৫
আলু ১২
লঙ্কা ৩০
মুলো ১৫-১৮
বেগুন ১৪-১৮
টম্যাটো ২৪-২৬
আদা ৮৫ |
পেঁয়াজ ৭০
আলু ২০
লঙ্কা ৮০
মুলো ৩০
বেগুন
৩০-৪০
টোম্যাটো ৫০
আদা-১৫০-১৬০ |
পেঁয়াজ ৭০
নতুন আলু ৩২
লঙ্কা ৭০
মুলো ৩০
বেগুন
৪০-৬০
টম্যাটো- ৬০
আদা-১৬০ |
পেঁয়াজ ৭০
আলু ২০
লঙ্কা ৫০
মুলো ৩০
বেগুন- ৩০-৪০
টোম্যাটো ৪০
আদা ১৫০ |
কিলো প্রতি দর টাকায়। |
|