|
|
|
|
জমা জল বার করতে খাল সংস্কারের দাবি
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
নিকাশি খালগুলি সংস্কার না হওয়ায় জমা জল বেরোতে পারছে না সহজে। ফলে পাঁশকুড়া ও তমলুক ব্লকের বহু এলাকায় এখনও জল দাঁড়িয়ে। এই অবস্থায় পূর্ব মেদিনীপুরের শঙ্করআড়া, পায়রাটুঙ্গি,গঙ্গাখালি ও প্রতাপখালি খালগুলি পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি জানাল কৃষক সংগ্রাম পরিষদ। বুধবার তমলুকের মহকুমাশাসকের কাছে এই নিয়ে স্মারকলিপি দেয় তারা। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিকাশি খালগুলি পলি পড়ে মজে রয়েছে। এ ছাড়াও খালের ধারে বেআইনি ভাবে নির্মাণকাজ গড়ে উঠেছে। ফলে জল দ্রুত বের হতে পারছে না। জমা জলে ভাঙছে ঘরবাড়ি। তা ছাড়া ধান, পান, সব্জি, মাছ ও ফুল চাষ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।” জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, বন্যা কবলিত এলাকার জল দ্রুত বের করার জন্য সেচ দফতর ও পুলিশের যৌথ বাহিনী কাজ করছে। |
|
বেহাল নিকাশি। শ্যাওলা জমে প্রায় মজে গিয়েছে পাঁশকুড়ায়
কাঁসাই নদী থেকে মেচেদায় রূপনারায়ণ পর্যন্ত নিকাশি খাল। |
গত অগস্ট মাসে কাঁসাই নদীর বাঁধ ভেঙে পাঁশকুড়া ও তমলুক ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছিল। সেই একই জায়গায় বাঁধ ভেঙে ফের বন্যার কবলে পড়েছে পাঁশকুড়া ও তমলুক ব্লকের প্রায় ২০০টি গ্রাম। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান, পান, ফুল ও সব্জি চাষে। সর্বস্বান্ত হয়েছেন বহু কৃষক। বন্যার জলে ডুবে থাকা তমলুকের বিষ্ণুবাড়-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতভিরাম গ্রামের পান চাষি নবদ্বীপ দাস বলেন, “আগেরবার বন্যায় আমন ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ বার জলস্তর আগের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় আমার ৭ কাঠা পানের বরজ সম্পূর্ণ ডুবে রয়েছে। সব দিক দিয়ে ডুবেছি। কী ভাবে সংসার চালাব বুঝতে পারছি না। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা বলাইচন্দ্র পাত্র বলেন, “একই বছরের দু’বার বন্যার কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছি। সরকার সাহায্য না করলে আর চাষ করতেই পারব না।” প্রথম দফার জল নামতেই অনেকে ফের সব্জি চাষের জন্য বীজ বোনেন। ক্ষতির মুখে পড়েন তাঁরাও।
পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সাগর সিংহ বলেন, ‘‘বিভিন্ন ফসল, চাষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরায় চাষে সাহায্যের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে।” |
|
তমলুকের শঙ্করআড়া খালে বন্ধ লকগেটের সামনে আবর্জনার স্তূপ। |
এ দিকে, বৃহস্পতিবার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে দাসপুরের বালিপোতায় আসেন কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তাঁরা বালিপোতায় কংসাবতী নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ পরিদর্শন করেন। পরে মহকুমাশাসক অদীপ রায়-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাও করেন। বেচারাম মান্না বলেন, “জল কমলেই সেচ দফতর সমস্ত বাঁধ মেরামতি শুরু করবে।” দুই মন্ত্রীই ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়কে রামপুরে একটি সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন।
|
ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
|
|
|
|
|