রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পদ থেকে রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে সরিয়ে দেওয়া হল। ওই পদে কোচবিহারের নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে নানা দফতরের কাজকর্ম পর্যালোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওই সিদ্ধান্তের কথা আধিকারিকদের জানিয়ে দেন। নতুন দায়িত্ব পেয়ে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা সব সময় করেছি। এবারেও তার ব্যাতিক্রম হবে না।” তাঁকে অপসারণের কথা জানেন না বলে দাবি করেন তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বরবাবু। তিনি দাবি করেন, “এ বিষয়ে কিছু জানি না।”
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বন উন্নয়ন নিগম সূত্রে জানা যায়, নানা পর্যটক আবাসের ভাড়া, কাঠ নিলাম সহ নানা ক্ষেত্রে রাজস্ব বাবদ বছরে ২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের কথা। যদিও গত আর্থিক বছরে মাত্র ৬৪ লক্ষ টাকার রাজস্ব আদায় হয়। নিগমের একাংশ কর্তার অভিযোগ, চেয়ারম্যান নিয়মিত নজরদারি এবং বৈঠক না করাতেই দফতরের রাজস্ব বাবদ আয় কমেছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা পড়ে। পাশাপাশি দলের থেকেও খগেশ্বরবাবুর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছেছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজগঞ্জ হাসপাতালে ঢুকে কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকদের হুমকি দেওয়া, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল খগেশ্বরবাবুর বিরুদ্ধে। সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূলের ফল আশানুরূপ হয়নি। যা নিয়ে নেতৃত্বের অসন্তোষের মুখে পড়তে হয় বিধায়ককে। বস্তুত, গত লোকসভা নির্বাচনের পরে রাজগঞ্জ বিধানসভা উপ নির্বাচনে জিতে খগেশ্বরবাবুই বাম আমলে জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূলের একমাত্র বিধায়ক ছিলেন। খগেশ্বরবাবুর সাংগঠনিক দক্ষতার স্বীকৃতি দিতে রাজ্যে পরিবর্তনের পরে খগেশ্বরবাবুকে বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত নেয় দল। খগেশ্বরবাবু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক নয়।” কোচবিহারের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর নেতৃত্বে বাম দখলে থাকা জেলা পরিষদ তৃণমূল পায়। জেলার ১২টির মধ্যে ১০টি পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল জিতেছে। |