আফস্পা প্রত্যাহারই চাই, কমিশনকে শর্মিলা
সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রত্যাহার ছাড়া অন্য কোনও সমাধানসূত্র মানতে নারাজ ইরম শর্মিলা চানু। আজ তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করতে যাওয়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদের কাছেও স্পষ্ট এ কথাই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। ওই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ১৩ বছর ধরে অনশন করছেন শর্মিলা।
ওই আন্দোলন শুরুর পর, এই প্রথম জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা চানুর সঙ্গে সরাসরি দেখা করলেন। আগামী দু’দিন মণিপুরে মানবাধিকার ভঙ্গের বিভিন্ন অভিযোগও তাঁরা খতিয়ে দেখবেন।
আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন কে জি বালকৃষ্ণন শর্মিলার কাছে জানতে চান, অসম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচলের দু’টি জেলায় বহাল ‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ রদবদল বা তুলনায় কম কঠোর করলে আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি হবেন কী না? তিনি দৃঢ় গলায় বলেন, ‘‘আইন পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হোক। অন্য কোনও শর্তে আমার আন্দোলন থামবে না।” পরে বালকৃষ্ণন সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা শর্মিলার মতামত, তাঁর স্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাবো। প্রয়োজনে, হাসপাতালে বন্দি শর্মিলার জন্য সরকারকে কিছু পরামর্শও দেওয়া হতে পারে। আইন প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনও ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই।”
শর্মিলার সঙ্গে দেখা করতে হলে অনেক নিয়মের বেড়াজাল টপকাতে হয়। প্রয়োজন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতিরও। এ নিয়েও কমিশনের কাছে অভিযোগ জানান। তিনি কমিশনকে জানিয়েছেন, আজ তাঁর প্রবাসী প্রেমিক ব্রাইটন ডেসমন্ড কুটিনহোর জন্মদিন। হাসপাতালের কেবিনেই তাঁর ছবি রেখেছেন। কিন্তু, শুভেচ্ছা জানাতে পারেননি। তিনি বলেছেন, “আমার গলায় সব কথা শান্তি, ন্যায় বিচারের জন্য আত্মসমর্পণ করেছি। আশা করি, সেটাই আমার প্রেমিকের জন্য সবচেয়ে বড় জন্মদিনের উপহার হবে।”
কমিশনের প্রতিনিধি সি যোসেফ বলেন, “আমরা জানি, শর্মিলার অনুগামীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান না। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলব।”
শর্মিলার সঙ্গে দেখা করে কমিশনের প্রতিনিধিরা লোকটাক সরোবরে যান। সরোবরের আশপাশ থেকে উৎখাত হওয়া মৎসজীবীদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভিযোগ শোনেন। যে রাজ্য থেকে উত্তর-পূর্বে সর্বাধিক মানবাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ জমা পড়ে, সেই মণিপুরেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশন কয়েক বছর ধরে সক্রিয় হতে পারেনি। নতুন চেয়ারপার্সন, সদস্য নির্বাচনও হয়নি। মণিপুরের মানবাধিকার কর্মীদের আশা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সে রাজ্যের কমিশনকে ফের সক্রিয় করে তুলতে ব্যবস্থা নেবে।
২০০০ সালের ২ নভেম্বর মণিপুরের মালোম গ্রামের বাসস্ট্যান্ডে জঙ্গি সন্দেহে ১০ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে নিরাপত্তাবাহিনী।
তারপর থেকেই গাঁধীর একনিষ্ঠ অনুগামী শর্মিলা ‘আফস্পা’ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। দিল্লি গিয়ে যন্তর-মন্তরের সামনে প্রতিবাদ জানানোর পর এইমস এবং আরএমএল হাসপাতালেও ‘বন্দি’ ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে ইম্ফল ফেরার পর থেকে জওহরলাল নেহরু হাসপাতালই তাঁর ঠিকানা। তাঁর লড়াইকে সমর্থন জানিয়ে ২০১০ সাল থেকে শর্মিলা সমর্থকদের যৌথমঞ্চ রিলে-অনশন চালাচ্ছে। চলছে ‘সেভ শর্মিলা’ অভিযানও। গোটা দেশে চানুর আন্দোলনের সমর্থন এবং ‘আফস্পা’ হঠানোর জন্য অভিযান করেছেন চানুর সমর্থকেরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.